পদ্মাসেতু রেল প্রকল্পের সুবিধা পেতে যশোরে রেল অবরোধ
যশোর থেকে ট্রেনে চড়ে পদ্মাসেতু দিয়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়ার স্বপ্ন বাঁচাতে রেল অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি। মঙ্গলবার দুপুরে যশোর রেলওয়ে জংশনে এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। ঘন্টাব্যাপি চলা এ অবরোধ কর্মসূচি জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে প্রত্যাহার হয়। তবে দাবি আদায় না হলে সারাদেশে রেলযোগাযোগ বন্ধ সহ কঠোর কর্মসূচি গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ।
এদিকে অবরোধের কারনে বেনাপোল এক্সপ্রেস ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস আধাঘন্টা যশোরের অদূরের স্টেশনে আটকে যায়। পরে অবরোধ সরিয়ে নিলে খুলনার সাথে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
যশোর-ঢাকা-পদ্মাসেতু লিংক প্রোজেক্টের উদ্বোধনী দিনে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ট্রেন চালুসহ দর্শনা-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে দুটি ট্রেন চালু, নিজ শহর থেকে প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করার জন্য ট্রেনের সময়সূচি তৈরি, আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ বগী যুক্ত করা, ট্রেনের ভাড়া বাসভাড় থেকে কম রাখা, ট্রেনের টিকিট প্রাপ্তির সহজ পদ্ধতি চালু, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং দর্শনা-খুলনা রেলপথ দ্রুত ডাবল করাসহ ছয় দফা দাবিতে আজ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। গত ২৪ নভেম্বর ঢাকা-নড়াইল-খুলনা রুটে পরীক্ষামূলক রেল চলাচল করেছে। কিন্তু যশোরে এখনও এ ধরণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ফলে নতুন এই রুটে যশোর থেকে কখন, কীভাবে ও ক'টি ট্রেন চলাচল করবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। এ কারণে তারা পদ্মাসেতু রেল প্রকল্পের সুবিধা পেতে ৩ ডিসেম্বর দুপুর ১টায় রেলপথ অবরোধ করছেন যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি। দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি অর্থাৎ পূর্ণ রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন তারা।
বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন বলেন, এই প্রকল্প শুরুর আগে ঢাকার সাথে যোগাযোগের জন্য তারা যশোর, মোবারকগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর প্রতিদিন তিনটি ট্রেন পেতেন। এগুলো যমুনা সেতু হয়ে চলাচল করত। এই রুটে দুটি ট্রেন রাজবাড়ী– ভাঙা– পদ্মাসেতু হয়ে চলাচল করছে। গত ছয় মাস ধরে শোনা যাচ্ছে, যশোর– ঢাকা– পদ্মাসেতু লিংক প্রোজেক্ট শুরু হলে খুলনার ট্রেনগুলো যশোরে আসবে না। সিঙ্গিয়া স্টেশনের পর ট্রেনগুলো গতিপথ পরিবর্তন করে পদ্মবিলা জংশন হয়ে ঢাকায় চলে যাবে। যশোর দিয়ে একটি মাত্র ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেস যাওয়া-আসা করবে। মোবারকগঞ্জ, কোটচাঁদপুরবাসী ঢাকায় যাওয়া–আসার জন্য একটি ট্রেনও পাবে না।
বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, ২৪ নভেম্বর ঢাকা খুলনা রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হলেও যশোর বাইরে থাকল, যা যশোরের মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এ কারণে বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি অবরোধের মতো কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হয়েছে।
অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুর রহমান হিরু, ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, অধ্যক্ষ শাহীন ইকবাল, যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মিলন, সংগ্রাম কমিটির নেতা আবুল হোসেন, মাহমুদ হাসান বুলু, খন্দকার আজিজুল হক মনি, নাজিমউদ্দীন, মাহমুদ রিবন, শেখ আলাউদ্দিন, নাসির উদ্দিন আহমেদ শেফার্ড সহ নেতৃবৃন্দ।