ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভে ইন্দোনেশিয়ার নারীরা

আইনপ্রণেতাদের সুযোগ–সুবিধা বৃদ্ধি ও পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদে গোলাপী রঙের পোশাক পরে, ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নেমেছেন ইন্দোনেশিয়ার নারীরা। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানী জাকার্তাসহ বিভিন্ন শহরে তাদের এই বিক্ষোভ দেশটিকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
বিক্ষোভ আয়োজন করেছে দ্য অ্যালায়েন্স অব ইন্দোনেশিয়ান উইমেন। সংগঠনটি জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, অপচয় এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দমন–পীড়নকে প্রতীকীভাবে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার বার্তাই ঝাড়ুর মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল— "পুলিশ সংস্কার করো" এবং "তোমার মিষ্টি প্রতিশ্রুতিতে ডায়াবেটিস হচ্ছে।"
গত সপ্তাহে শুরু হওয়া আন্দোলন বৃহস্পতিবার রাতে নতুন মাত্রা পায়, যখন পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল ট্যাক্সি চালকের মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। কোথাও কোথাও দাঙ্গা ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে।
এর আগে সহিংস প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় নারীদের নেতৃত্বাধীন এই জোট সোমবারের কর্মসূচি বাতিল করেছিল। কিন্তু বুধবারের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে তারা আবারও রাস্তায় নামে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৩০ বছর বয়সী রিজকি আনন্দ বলেন, "আমরা দেখাতে চাই আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে। এখন যদি সরকার এসবকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে, তবে প্রশ্ন উঠবে।"
দেশজুড়ে উত্তেজনার মধ্যেই ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বুধবার চীনে যান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ও জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজে অংশ নিতে।
এর আগে দেশে অস্থিরতার কারণে তিনি সফর বাতিল করেছিলেন এবং চীনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় এবার তিয়েনআনমেন স্কয়ারের কুচকাওয়াজে যোগ দেন।
প্রাবোও আগে বলেছিলেন, সহিংসতা হলে সামরিক বাহিনী ও পুলিশ কঠোরভাবে দমন করবে। এমনকি বিক্ষোভে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও সন্ত্রাসবাদের চিহ্ন আছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছিলেন।
ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার বিষয়ক জাতীয় কমিশন জানিয়েছে, এক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা তদন্ত করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ও ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে— মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে খতিয়ে দেখতে।
Comments