ক্রমাগত পতনে পুঁজি হারিয়ে বিপর্যস্ত বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে পতন অব্যহত গতিতে চলছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪১ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে গিয়ে দাড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৭৮ পয়েন্টে। এটি গত ১১ বছর ৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থান। উল্লেখযোগ্য, ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি এই সূচক নেমেছিল ৪ হাজার ৬৭৫ পয়েন্টে। এই পতনের ফলে বাজার নেমে গেছে এক দশকের বেশি সময় আগের অবস্থানে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তীব্র হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
টানা দরপতনে অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারী এখন মূলধন হারিয়ে বিপর্যস্ত। কেউ কেউ দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করে অপেক্ষায় থাকলেও, লাভ তো দূরে থাক—মূল টাকাই তুলে নিতে পারছেন না।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা, আস্থা ও সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনার ঘাটতি স্পষ্ট। অনেক কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন ইতিবাচক হলেও শেয়ারদরে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। তাঁদের মতে, বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন ধরে সুচিন্তিত নীতিমালার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নিজেই আস্থাহীনতার মুখোমুখি। কমিশনের ভেতরে এখন পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। শুধু অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাই নয়, শেয়ারবাজারের প্রধান অংশীজনদের সঙ্গেও কমিশনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, অ্যাসোসিয়েশন ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কমিশনের দূরত্ব বাড়ছে, যার ফলে বাজার নিয়ে অনেক সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে না।
আজ মঙ্গলবার ডিএসই'র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪১.২৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬৭৮ পয়েন্টে। যা গত বৃহস্পতিবার ১৬ পয়েন্ট, শনিবার ৩৮ পয়েন্ট, সোমবার ১৭ পয়েন্ট ও রোববার ১০ পয়েন্ট কমেছিল।
আজ ডিএসইতে ২৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৮২ কোটি ৬২ লাখ টাকার। সেই হিসাবে লেনদেন কমেছে ৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বা ৩ শতাংশ।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৮৩টির বা ২১.১৭ শতাংশের, কমেছে ২৩৭টির বা ৬০.৪৬ শতাংশের এবং দর পরিবর্তন হয়নি ৩৬টির বা ১৮.৩৭ শতাংশের।
প্রায় ৫৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়ে ব্যাংক খাত লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে। এ খাতে ৪১ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। খাদ্য খাতে ২৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়। প্রকৌশল খাতে ২৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ১০ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২০৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৬১টির, কমেছে ১১৫টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩১টির।
এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
Comments