জমি বিরোধ ও পাট শুকানো নিয়ে সংঘর্ষে ২০ জন আহত

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামে জমি বিরোধ ও সড়কে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় সাতজন গুরুতর আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, যাদের মধ্যে উত্তম সরকার (৩০) নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাজিদাদপুর গ্রামের নিতিশ কুমার বালা (৫৫) ও জগদীশ কুমার বিশ্বাসের (৬০) মধ্যে বাড়ির সামনের রাস্তা সংলগ্ন জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একাধিক সালিশ বৈঠকের পর সম্প্রতি সীমানা নির্ধারণ করে পিলার বসানো হয়। তবে শুক্রবার সকালে জগদীশ বিশ্বাসের গ্রুপ সড়কে পাট শুকাতে গেলে নিতিশ বালার গ্রুপ তাতে বাধা দেয়। বাঁশ সরানো নিয়ে শুরু হওয়া বাকবিতণ্ডা ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, ফলে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহতদের মধ্যে বিশ্বাস গ্রুপের জগদীশ বিশ্বাস (৬০), জয়ন্ত বিশ্বাস (২৬), অপূর্ব বিশ্বাস (৩৫) এবং বালা গ্রুপের শিবু বালা (৬০), রতন বালা (৪০) ও সুজন সরকার (২৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া ইতি বিশ্বাস (৫২), সুশান্ত বিশ্বাস (৩০), রবিন বিশ্বাস (৫০), সমীর বিশ্বাস (৪০), শুক্লা বিশ্বাস (৩৩)সহ বাকি আহতরা বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা হক রুম্পা জানান, "সংঘর্ষে আহত ১৭ জন হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।"
শেখর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাইদ (পান্নু) জানান, "খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি। সংঘর্ষ থামার পর টহল পুলিশ মাঝপথ থেকে ফিরে গেছে।" তিনি আরও বলেন, এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, "এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তিনি জানান, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Comments