আকস্মিক সন্ধ্যা নদী ভাঙনে চার বসতঘর বিলীন

আকস্মিক সন্ধ্যা নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ চরহোগল পাতিয়া গ্রামের চারটি পরিবারের বসত ঘর।
এছাড়াও ওই এলাকার সবুজ বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ চরহোগল পাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামে মসজিদ, ভাঙ্গারমুখ লঞ্চঘাটসহ নদী তীরবর্তী প্রায় ৩০টি বসত ঘর ভাঙন হুমকির মুখে পরেছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে এগারোটা থেকে সন্ধ্যা নদীর আকস্মিক ভাঙনে বসতিগুলো বিলীন হয়েছে।
এ পর্যন্ত চারটি বসতঘর ও গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ওইসব পরিবারগুলো মাথাগোজার শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছেন।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে ভুক্তভোগী মজিদ বেপারী বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাত করে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ধুপধাপ শব্দ পেয়ে ঘুম থেকে উঠে দেখি গাছপালাগুলো নদী গ্রাস করে নিচ্ছে। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বসত ঘরটি নদী গ্রাস করে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যা নদী এক নিমেষে আমাদের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাথাগোজার শেষ সম্ভল ভিটে মাটি কেড়ে নিয়ে আমাদের নিঃস্ব করে দিয়েছে। এখন সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাবো বলেই কেঁদে ফেলেন দিনমজুর মজিদ বেপারী।
ভুক্তভোগী আজিজ বেপারী জানান, রাতে আকস্মিক ভাবে গাছপালা ও বসত ঘর নদীতে দেবে যাওয়ায় কোনকিছুই সরানোর সুযোগ পাইনি।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম বলেন, হঠাত করে ঝুপঝাপ শব্দ পেয়ে বাড়ি থেকে এসে দেখি নদী তীরবর্তী চারটি বসত ঘর, জমিজমাসহ গাছপালা নদী গিলে নিয়েছে।
সন্ধ্যা নদীর গর্ভে বিলীন হওয়া ভুক্তভোগী চার পরিবারের মজিদ বেপারী, আজিজ বেপারী, সালেক বেপারী ও বারেক বেপারী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর অনুরোধ করেছেন।
বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান খান হিমু বলেন, সন্ধ্যা নদীর ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে ওই এলাকার দুইটি বিদ্যাপিঠসহ অনেক বসত বাড়ি।
তিনি আরও বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করছি।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, আকস্মিক নদী ভাঙনের খবর পেয়ে ওই এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
পাশাপাশি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে।
Comments