৩২ নম্বরে ফুল দিতে যাওয়া সেই রিকশাচালকের জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই

ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে গণপিটুনির পর হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে যাওয়া রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমান জামিন পেয়েছেন। রবিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন। তবে তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলা না থাকায় কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানান সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এদিন আসামিপক্ষে আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে ১৫ আগস্ট ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। পরে তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরদিন ১৬ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়কার ধানমণ্ডি থানার এক হত্যাচেষ্টা মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন ধানমণ্ডি থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান। পরে শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশের নেতৃত্বে নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর উপর্যুপরি এলোপাতাড়ি গুলি, পেট্রলবোমা ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে।
ঘটনার দিন বিকেলে আসামিদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ হুকুমে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে নির্বিচারে গুলি করা হয়। এ সময় ভুক্তভোগী মো. আরিফুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে পড়ে যান। নিকটস্থ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ দুই মাস চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হন। পরে গত ২ এপ্রিল আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ধানমণ্ডি থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।
এতে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ১০০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, তথ্যমন্ত্রী শফিকুল আলম তাঁর ফেসবুক পেইজে এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিবৃতি দিয়েছেন। তার লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
'রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ থেকে আটক রিকশাচালক জনাব মো. আজিজুর রহমানকে কীসের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে কোন অসঙ্গতি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
দায়েরকৃত মামলায় জনাব আজিজুর রহমানের সম্পৃক্ততা তদন্ত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সম্প্রতি সংশোধিত সিআরপিসির ১৭৩(এ) ধারা মোতাবেক অতিসত্বর প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে'।
Comments