চার দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ওয়ারেন বাফেটের রেকর্ড ৬ বিলিয়ন ডলার অনুদান

ধনকুবের ও বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট গত শুক্রবার বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ইনকর্পোরেশনের ৬ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার দান করেছেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনসহ তার পরিবারের চারটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে। ২০০৬ সাল থেকে দান শুরু করার পর এটিই তার সবচেয়ে বড় এককালীন বার্ষিক অনুদান।
এই অনুদানে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ৬ হাজার ক্লাস বি শেয়ার দিয়েছেন বাফেট। যার ফলে গেটস ফাউন্ডেশন ও পরিবারের অন্যান্য দাতব্য সংস্থায় তার মোট অনুদানের পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
দানের মধ্যে গেটস ফাউন্ডেশন পেয়েছে ৯৪ লাখ ৩০ হাজার ও সুসান থম্পসন বাফেট ফাউন্ডেশন পেয়েছে ৯ লাখ ৪৩ হাজার ৩৮৪টি শেয়ার। তিন সন্তানের নামে পরিচালিত তিনটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান—হাওয়ার্ড জি, বাফেট ফাউন্ডেশন, শেরউড ফাউন্ডেশন ও নোভো ফাউন্ডেশন পেয়েছে সমানভাবে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৩৬৬টি করে শেয়ার।
এ অনুদানের পরও ওয়ারেন বাফেট বার্কশায়ারের মোট শেয়ারের ১৩ দশমিক ৮ শতাংশের মালিক রয়ে গেছেন। অনুদানের আগে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৫২ বিলিয়ন ডলার, যা তাকে বিশ্বের পঞ্চম ধনী ব্যক্তি করেছিল। অনুদানের পর তার অবস্থান হয়েছে ষষ্ঠ।
বাফেটের মৃত্যুর পর তার ৯৯.৫% সম্পদ দান করে দেয়া হবে। ৯৪ বছর বয়সী বাফেট ২০২৩ সালে নিজের উইল [অছিয়ত] পরিবর্তন করে মৃত্যুর পর তার বাকি সম্পদের ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ একটি দাতব্য ট্রাস্টের অধীনে দান করার সিদ্ধান্ত নেন। তার সন্তান হাওয়ার্ড (৭০), সুজি (৭১) ও পিটার (৬৭) ট্রাস্টের তত্ত্বাবধায়ক হবেন এবং তারা সর্বসম্মতিক্রমে পরবর্তী ১০ বছরের মধ্যে এই অর্থ বিতরণ করবেন।
বাফেট এক বিবৃতিতে জানান, তিনি এখনো কোনো বার্কশায়ার শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা করছেন না। তিনি ২০০৬ সাল থেকে নিয়মিতভাবে এই শেয়ারগুলো দান করছেন। তিনি আরও বলেন, গেটস ফাউন্ডেশনে অনুদান মৃত্যুর পর বন্ধ থাকবে।
১৯৬৫ সাল থেকে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের নেতৃত্বে থাকা বাফেট বর্তমানে ১ দশমিক শূন্য ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি বিশাল কংগ্লোমারেট পরিচালনা করছেন। প্রতিষ্ঠানটির অধীনে প্রায় ২০০টি ব্যবসা রয়েছে, যার মধ্যে আছে গেইকো কার ইন্স্যুরেন্স, বিএনএসএফ রেলওয়ে এবং অ্যাপল ও আমেরিকান এক্সপ্রেস-এর মত বড় বড় কোম্পানির শেয়ার।
সুজি বাফেট পরিচালিত সুসান থম্পসন বাফেট ফাউন্ডেশন মূলত প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে। শেরউড ফাউন্ডেশন নেব্রাসকার স্থানীয় এনজিও ও শিশু শিক্ষায় সহায়তা করে। হাওয়ার্ড জি. বাফেট ফাউন্ডেশন বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, মানবপাচার ও সংঘাত নিরসনে কাজ করে। নোভো ফাউন্ডেশন কাজ করে প্রান্তিক নারীদের অধিকার এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে।
Comments