প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা মেনেই আলোচনা হচ্ছে: আলী রিয়াজ

প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনা অনুসরণ করেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি জানান, ইতোমধ্যে যেসব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে এবং প্রত্যেকটা বিষয়ে তিনি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে সংসদ ভবনের এলডি হলে পাঁচ কমিশনের দেয়া সংস্কার প্রস্তাবের ওপর মতামত নিতে বিএনপির সঙ্গে তৃতীয় দিনের মতো আলোচনার বসার আগে এসব কথা বলেন আলী রিয়াজ।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, 'বিএনপির সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন বা সংশ্লিষ্ট কমিশন থেকে যেসব সুপারিশ পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে বেশকিছু বিষয়ে তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রয়েছে, আবার কিছু বিষয়ে মতের ভিন্নতাও রয়েছে।'
তবে যেসব বিষয়ে মতভিন্নতা আছে তার অনেকগুলো বিষয়ে তাদের নীতিনির্ধারকদের সাথে আলোচনা করবেন এবং আমাদের জানাবেন।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সন্ধিক্ষণে রয়েছি। সুপারিশমালার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেবল এই টেবিল থেকে হতে পারে না। কারণ, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর নীতিনির্ধারকেরা নিঃসন্দেহে অংশগ্রহণ করবেন।'
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ৪ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের হয়ে আজ (মঙ্গলবার) আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং সাবেক সচিব আবু মো. মনিরুজ্জামান খান।
এর আগে, এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি। পরে রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপে যোগ দেয় দলটি।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে একটি অংশীদারিত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরির লক্ষ্যে ২০ মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের উপর একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় অবস্থান তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে এটি পাঁচটি সংস্কার কমিশনের মূল সুপারিশগুলো প্রস্তুত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সাংবিধানিক, জনপ্রশাসন, নির্বাচনী, বিচার বিভাগীয় এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্কারগুলো। মূল সুপারিশগুলোর ওপর মতামত চেয়ে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে এর স্প্রেডশিট পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩৫ টি দল মতামত দিয়েছে।
এ পর্যন্ত ১৫টি রাজনৈতিক দলের সাথে প্রথম পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে ঐকমত্য কমিশন।
Comments