জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনে ২৪৪ জন শিক্ষকের উদ্বেগ

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের (OHCHR) কার্যালয় স্থাপনের ঘোষণায় ২৪৪ জন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষক উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। ৭ আগস্ট এ বিবৃতি দেন তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা, বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজ, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের (OHCHR) কার্যালয় স্থাপনের ঘোষণায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা মনে করি, এ সিদ্ধান্ত দেশের সার্বভৌমত্ব, শিক্ষা-সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসগঠনের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে'।
'যদিও মানবাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তবে জাতিসংঘের 'মানবাধিকার' ধারণা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পূর্বে দেখা গেছে, এই ধরনের আন্তর্জাতিক অফিস পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হয়—যেমন এলজিবিটি (LGBTQ+), ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড, গর্ভপাতের বৈধতা ইত্যাদি। ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ পরিপন্থী এসব বিষয় আমাদের পাঠ্যক্রমে চাপিয়ে দেবার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজে বিভ্রান্তি ও সংকট তৈরির যৌক্তিক শঙ্কা আমাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে'।
২৪৪ শিক্ষকের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, "বিশ্বের যেসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস রয়েছে, সেসব দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ। উপরন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্ত জনগণের মতামত ও জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থী। আমরা মনে করি, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনগণের মতামত, ধর্মীয় নেতৃত্ব, জাতীয় সংসদ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত ছিল। দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি-সার্বভৌমত্ব এবং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষার স্বার্থে আমরা এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি'।
বিবৃতি প্রদানকারী ২৪৪ জন শিক্ষকের মধ্যে রয়েছেন: ৫০ জন প্রফেসর, ৪১ জন এসোসিয়েট প্রফেসর, ৭৮ জন অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর এবং ৭৫ জন লেকচারার।
বিবৃতি প্রদানকারীদের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন, সাস্টের ২০ জন, বুটেক্সের ১৮ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৯ জন, আইইউবি'র ৬ জন, বুয়েটের ৪ জন, রুয়েটের ৪ জন, বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ৪১ জনসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষকরা রয়েছেন। বিবৃতি প্রদানকারী শিক্ষকদের বিস্তারিত তালিকা www.mullobodh.com ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিপ্রদানকারীদের মাঝে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মুহাম্মদ ওমর ফারুক ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মো. আব্দুস সবুর, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির লেকচারার আসিফ মাহতাব উৎস, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর শামীমা তাসনীম, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. মো. আরিফ মোর্শেদ খান, মেডিকেল কলেজ ফর ওমেন এন্ড হসপিটালের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডাক্তার মিলিভা মোজাফফর, বুয়েটের প্রফেসর মোঃ মাসুদ করিম এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. মোঃ লামিউর রায়হানসহ অন্যরা।
Comments