চেয়ার
দারোগা সময় একদিন বাদে বাদে কখনওবা দুইদিন বাদে গাড়িযোগে নাইট ডিউটি করতাম। আমি সামনে বসতাম।
শীত গরমের রাতে মশা কয়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করত। সে উত্তরা আজমপুর টু ধৌড় চেকপোস্ট পর্যন্ত ডিউটি করতাম। ওয়াকিটকিতে ডিউটির সাংকেতিক নাম থাকত। ওসি এসি (সার্কেল) ডিসি পুলিশ কমিশনার তাদেরও সাংকেতিক নাম থাকত। পৌষ মাঘের শীত হোক, হোক সূঁচালো বর্ষা। নির্দ্দিষ্ট এলাকাজুড়ে দারোগার ডিউটি থাকত। রাতে সিনিয়র স্যারেরা সাংকেতিক নামে ডিউটি তদারক করতেন। থানা উত্তরা, রাতে এক বাড়িতে ডাকাতি হয়ে গেল।
ও এলাকার নাইট ডিউটিতে থাকা আমার সহকর্মী এসআই সাসপেন্ড হয়ে গেলেন।
আমি এখনো তাকে নিয়ে ভাবি। তার গুরুদণ্ড হয়ে গেল।
সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ল।
সে ভালো অফিসার ছিল। দেখতাম, গরীবের পেট বুঝে কলা বিস্কুট খাইয়ে দিতেন। পরে আমি কাফরুল থানায় জয়েন করি। পরে জেনেছি, তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল, কোনো এক সিনিয়র তাকে নিয়ে ভুলের সাথে মিথ্যে মিশেল একাকার অপপ্রচার চালানোর কারণে। ওই সিনিয়র স্যারটি ছিলেন, নানাভাবে নানা কারণে তার প্রতি সংক্ষুব্ধ। নানা বাহিনীর অধস্তনকে নিগৃহীত হতে হয়, কোনো না কোনোভাবে কানভারী করেন এমন কোনো না কোনো চরম স্তাবক চোগলখোরদের কারণে।
সে তার সাসপেন্ড টেনশনে থেকে দিনের পর দিন বছর পেরিয়ে গেছে; তার সাসপেন্ড আদেশ প্রত্যাহার হয়নি। আধাবেতনে থেকে তাকে সংসার চালাতে দেখেছি। তাকে দেখে দেখে আমিও মনে করেছি, হঠাৎ করে রাজার রাজ্য হারা রাম লক্ষণ সীতার মতন। পেট চালাতে ভোর রাতে সে সহকর্মী কারওয়ান বাজারে পাইকারি হারে উত্তরবঙ্গ হতে সবজি সাপ্লাই দিতো। সে সাপ্লাই সময়ে বার বার 'ক' শ্রেণির খুনি ডনের লোকজন তার দিকে তাকায়। তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। চাঁদা দিতে বলে।
আমি মেনে নিতে বলি। তাকে সময়ের সাথে স্তাবকদের মতো আপস করতে বলি।
মাসখানেক পরে দেখি, সে ছোগলখোর স্তাবক অফিসার তার সাথে চলতে ফিরতে ভাই ভাই বলেন।
'পৃথিবী সময়ের দাসমাত্র। দেশ রাজনীতি নিয়ে আমি যতদিন দেশে আছি, পেটে হাইড্রোজেন বোমা মেরে একটি কথাও কেউ বের করতে পারবে না বলে — চিত্র নায়িকা মাহিয়া মাহি মুখে নিশ্চয়তা দিয়ে গেলাম। "
বিদেশ রাজনীতির মুখে বলে যাই —
" দেশ দেশে গিয়ে দেশ নিয়ে যাক
বিদেশী কেউ এসে সে দেশে নেংটা করে জনগণ পেটায় পেটাক,ধর্ষণে
ধর্ষণে সে জাতিকে আগাম আগামীর বর্তমান রজ:দর্শন
করাক, তাতে আমার কী?
লাশের পাহাড় বানিয়ে দিক, আমি কিছু বলব না।
সে মানুষ লাশের হাড্ডি দিয়ে রাজন্য ব্যক্তিবর্গের সুরাপত্র বানিয়ে দিক। তাতে আমার কী?
'আমি এখন ঈশ্বরের বন্ধু। আমার বেঁচে থাকা লেখার জন্য'।
ঈশ্বরের কাজ দেখাদেখি পর্যন্ত। সে কারণে পৃথিবীর কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে ঈশ্বর নিগৃহীত হন। তাকে বিভিন্নভাবে বিশ্রীভাবে মারা হয়। তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের মসজিদ মন্দিরে মারা হয়। পুড়িয়ে গীর্জা প্যাগোডাতে মারা হয়। ঈশ্বরও নিরীহ কিসিমের নিরীহ প্রাণী।
সে কিছু বলে না, সে মার খেয়ে খেয়ে মানুষের বিশ্বাসে চিড় ধরায়। সে দিনের পর দিন মানুষের বিশ্বাসের কাছে শ্রেষ্ঠত্ব হারিয়ে কান্নাকাটি করে চলেছেন। তাঁকে সামনে রেখে একদল চোর ডাকাত তার নানা নামে মসজিদ মন্দির গীর্জা প্যাগোডা বানিয়ে নিজেদের মাঝে মারামারি বাঁধায়। একদল ভেঙে দেয়, আবার অন্যদল বানায়। তাঁকে নিয়ে ভাঙাগড়া খেলায় — আমার ঈশ্বর বন্ধুটি যারপরনাই ক্লান্ত।
যুগে যুগে মানুষের নানানরকম বিপদে সে পাশে থেকেছে। এখন মানুষদের শ্রেষ্ঠত্বের আসন তিনি নিজে থেকে ছেড়ে দিছে। সে কারণে মানুষের
নানাভাবে কসমে শপথে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ মিথ্যা চুম্বনে উনি বিচার করেন না। ধর্মে কটুক্তি অবমাননা বিচারে মানুষের বিচার নাই দেখে,একদল আণবিক হাইড্রোজেন আদালতে ট্রিগার চেপে বসে আছে। অন্যদল সরাসরি তাৎক্ষণিকভাবে জল্লাদের হাতে কতলের নির্দেশ দিয়ে বসে আছে। ঈশ্বরের বিচারিক ধৈর্য্য সময় নিয়ে মানুষ আস্থা হারিয়েছেন। খোদা আল্লাহ গড বুদ্ধ ঈশ্বর অবমাননা ঈশ্বরিক বিচারে মানুষের কিছু হয় না।
রাষ্ট্রপক্ষের কাঁধে দায়ভার চাপিয়ে দিয়ে বিচার খালাসের যে প্রকারে চলে দূর্বল রাষ্ট্রের বিচার, সে প্রকারে চলে সবল ও দূর্বল মানুষের দিনের পর দিন ঝুলে থাকা ধর্ম বিচার। যে দেশের মানুষ জ্ঞানী সে দেশের খোদা ঈশ্বরও হন জ্ঞানী। জ্ঞানের মাঝেই বাস করেন আমার খোদা বন্ধুটা। সর্বস্ব হারানোর সংজ্ঞা জানেন, অতি সাধারণ জনগণ। মানুষ, নাই ধর্ম বিশ্বাসে নিজেদের নিয়ে দলে সদলবলে ছুটে চলেছেন দিনের পর দিন। সে কারণে মসজিদ মন্দির প্যাগোডা চার্চে সিসিটিভি ক্যামেরা পাহারাদার দিয়ে ঈশ্বর খোদা গড বুদ্ধ পাহারা দিতে হচ্ছে হয়েছে হবে ও আগাম আগামী দিন।
শান্তিতে নোবেলজয়ী মাসাদো ঈশ্বর খোদা বন্ধু কী না জানি না। তবে শ্রেষ্ঠত্বের চেয়ার তার নিতম্বে। মনুষ্যত্বের চেয়ার তাঁর কোথায় লুকোনো তা
আমার পেটে বোমা মেরেও কেউ বের করে নিতে পারবেন না। আমি হচ্ছি,যত মত তত পথ খোদা ঈশ্বর গড বন্ধু। ঈশ্বর বন্ধু বলে আমিও জানি না।
— চেয়ার মানে খোদা ঈশ্বরের গীবত।
— চেয়ার মানে নিরীহ মতের বিপরীত।
— চেয়ার মানে ঈশ্বরের ভুল অনুবাদ।
— চেয়ার মানে ঈশ্বরের নানা কাজে বাধা
— চেয়ার মানে ঈশ্বরের বাইরে
বহুতা অপ ঈশ্বরের প্রতীক।
Comments