সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে: পরীক্ষা নিলেন প্রধান শিক্ষক, পিয়ন ও অভিভাবকরা
নীলফামারী সদর উপজেলার ২০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় শিক্ষার্থীদের ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা (বার্ষিক পরীক্ষা) নিয়েছেন বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষক, পিয়ন ও অভিভাবকরা। এতে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৪ হাজার ১শ' ৭২জন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভোগান্তির কোনো শেষ নাই।
সদর উপজেলার টুপামারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সায়ফুল ইসলাম মানিক জানান, দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে গত ৮ নভেম্বর থেকে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। গত ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যা প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানানো হয়। ফলে তারা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঢাকা ত্যাগ করেন। কিন্তু এ পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এদিকে গত সোমবার (১লা ডিসেম্বর) থেকে উপজেলার সকল বিদ্যালয়ে ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় শুধু প্রধান শিক্ষক, পিয়ন ও অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। অভিভাবক সবনম মুস্তারী দ্রুত সহকারী শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। একাধিক বিদ্যালয়ের কর্মবিরতিতে থাকা সহকারী শিক্ষকরা বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
জানকীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা কর্মবিরতি পালন করছে। ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা বর্জন করেছে।
সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আতাউল গনী ওসমানী বলেন, সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশে প্রধান শিক্ষক, পিয়ন ও অভিভাবকদের সমন্বয়ে ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোথায় কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জছিজুল আলম মন্ডল বলেন, সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে আছেন। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এবং পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যাতে ভোগান্তিতে না পড়ে আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি।
Comments