হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিম্নমানের খাবার বিতরণ ভুক্তভোগিদের ক্ষোভ
চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য সরবরাহকৃত খাবারে ব্যাপক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রুই মাছের বদলে ব্রয়লার মুরগি পরিবেশন করা হলেও, তার ওজন নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অনেক কম ছিল বলে রোগীরা অভিযোগ করেছেন।
৩০ নভেম্বর রবিবার সরজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহ তালিকা অনুযায়ী, রবিবার দুপুরে রোগীদের ১৮৬ গ্রাম ওজনের রুই মাছ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটির পরিবর্তে তাদের দেওয়া হয় ব্রয়লার মুরগি। তবে এই মুরগির মাংসেরও পরিমাণ মানা হয়নি। রোগীদের অভিযোগ, ২৪১ গ্রাম দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭৯ গ্রাম। এটি নির্ধারিত পরিমাণের এক-তৃতীয়াংশেরও কম।
একের পর এক নিম্নমানের খাবার সরবরাহ এবং পরিমাণের এই মারাত্মক ঘাটতি নিয়ে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভর্তি থাকা একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে এসেও খাবার নিয়ে এমন 'পুকুরচুরি' মেনে নেওয়া যায় না। খাবার এতটাই নিম্নমানের ও পরিমাণে কম যে, রোগীরা ঠিকমতো পুষ্টি পাচ্ছেন না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আসিফ, আবদুর রহমান, হেদায়েত উল্লাহ সহ আরো আনেক রোগী জানান, প্রায় প্রতিদিনই খাবারের মান ও পরিমাণ নিয়ে তারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কেএম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব ।
তবে রোগীরা বলছেন, কেবল আশ্বাস নয়, খাবারের মান ও পরিমাণে তদারকি নিশ্চিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযান চালিয়ে রোগীদের খাবারে অনিয়মসহ একাধিক অব্যবস্থাপনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছিল। এরপরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
খাবার বিতরণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করেও তাদের পক্ষ থেকে কোন ধরনের উত্তর পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগী রোগীদের দাবি, অবিলম্বে খাবারের তালিকা অনুযায়ী সঠিক মানের ও পরিমাণের খাদ্য নিশ্চিত করা হোক এবং যারা এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
Comments