জ্বালানি তেলের দাম কমানোর এখনই সময়

ঢাকা জার্নাল রিপোর্ট
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম গত দশ বছরের মধ্যে বর্তমানে সর্বনিম্ন,অথচ আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ। গত মাসের চেয়ে জ্বালানি তেলের দাম কমে ব্যারেল প্রতি ৬০/৬১ ডলারে নেমেছে। তাই বলা হচ্ছে, দেশে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সর্বোত্তম সময় এখন। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের এখন যে দাম তাতে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমানো সম্ভব বলে এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন।
জ্বালানি খাতের দাম নির্ধারণ করার সরকারি বিধিবদ্ধ সংস্থা হলো বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বা বিইআরসি। তবে বিইআরসি জ্বালানি তেল বাদে এলপিজি,বিদ্যুৎ,সিএনজি এগুলোর দাম গণশুনানির মাধ্যমে নির্ধারণ করে। এ অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো বা কমানোর একমাত্র এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের।
সরকার এককভাবে জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণন করে থাকে। এখানে বেসরকারি খাতের কোন উপস্থিতি নেই। সরকার জ্বালানি তেল বিক্রি করে বিশাল অর্থ মুনাফা করে থাকে। জনগণের পকেট থেকেই পুরোটা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজার দাম বাড়লে যত দ্রুত বাড়ানো হয়, কমলে সরকার নীরব থাকে।
দেশের জনগণ যেহেতু জ্বালানি তেলের প্রধান ভোক্তা সে হিসেবে জ্বালানি তেল আমদানির খরচ, বিপণন খরচ, সরকারের মুনাফার তথ্য জনগণের সামনে কখনও প্রকাশ করা হয় না। জ্বালানি তেলের দাম কমলে যে পরিমাণ নগদ লাভ কমে তার বহুগুণ ফিরে আসে পরোক্ষভাবে। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের দাম কমালে যোগাযোগ,শিল্প,কৃষি উৎপাদন থেকে অনেক বেশি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দাবি উঠলেই বলা হয় পার্শ্ববর্তী দেশে জ্বালানি তেল পাচার হয়ে যাবে। পাচার হয়ে যাওয়ার দায় জনগণের উপর চাপানো হয় যখন আমাদের বিশাল সীমান্ত রক্ষী বাহিনী আছে পাহারার জন্য।
বাংলাদেশ মূলত সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে তেল কেনে। এই দুই দেশ থেকে মারাবান ক্রুড ও অ্যারাবিয়ান লাইট কেনা হয়। এই দুটি তেলের দাম ডব্লিউটিআই ও ব্রেন্ট ক্রুডের চেয়ে কিছুটা বেশি।
অর্থনৈতিক সুফল পেতে হলে তেলের দাম কমানো দরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। এককভাবে শুধু বিপিসির মাধ্যমে আমদানি না করে অন্যান্য সংস্থাকে দিয়েও আমদানি করানো যায়। এতে বাজারে কিছুটা প্রতিযোগিতা আসবে। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ভিন্ন উৎস থেকে তেল আমদানি করতে পারে, তাহলে ভোক্তাদেরই লাভ। এ ছাড়া তেলের শুল্ক যৌক্তিকীকরণ করা দরকার।
Comments