যে কারণে শুল্কনীতি নিয়ে কট্টর অবস্থান থেকে সরলেন ট্রাম্প

একদিন আগেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন তিনি তার ট্যারিফ সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটবেন না। কিন্তু তিনি তার নিজের অবস্থানে থাকতে পারেননি। তার নয়া শুল্কনীতি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা দিয়ে বলেছেন চীন ছাড়া বাকি সব দেশের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ট্রাম্পের ঘোষণা অনুসারে, চীনা পণ্যের উপর এ বার ১২৫ শতাংশ হারে শুল্ক ধার্য্য হবে।
কিন্তু আসল কারণ কী যে ট্রাম্প তার কট্টর অবস্থান ধরে রাখতে পারলেন না? শেয়ার বাজার,পণ্যবাজারে বড় ধাক্কার পর মার্কিন বন্ড মার্কেটে ধস নামার কারণে নড়েচড়ে বসে ট্রাম্পের কাছের লোকজন। আর এ কারণেই সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়েছে তাকে। তিনি বারবার মানুষকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়ে বলছিলেন যে, এটাই শেয়ার ও বন্ড কেনার সময়। কিন্তু মার্কিন বন্ডের ইয়েল্ড ৪.৫ শতাংশে উঠে যাওয়ার পর বিক্রির চাপ এত বেশি বেড়ে যায় যে, ফেডারেল পলিসি মেকাররা অর্থনীতি পুরোটাই ধসে পড়ে কিনা সেই আতংকে পড়ে যান।
'আমার নীতি বদলাবে না,এমন কথা বারবার বললেও বুধবার ট্রাম্প বুঝতে পারেন তার সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। ইউএস গভার্নমেন্ট বন্ড মার্কেটের পতন শুরু হলে নড়েচড়ে বসেন ট্রাম্পের সহযোগীরা। ট্রেজারি বিভাগের ভেতর আতংক শুরু হয় যে তবে কি দেউলিয়া হতে চলেছে আমেরিকা? বুধবারে ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট সরাসরি ট্রাম্পের কাছে তার উদ্বেগের কথা জানান। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন হোয়াইট হাউজের অর্থনীতি বিষয়ক কর্মকর্তারা। তারাও একমত হন ট্রেজারি সেক্রেটারির সঙ্গে। কমার্স সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লুটনিকও মত দেন শুল্ক স্থগিতের।
স্টক মার্কেটে ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতির পরও ট্রাম্প স্থির ছিলেন তার ট্রারিফ সিদ্ধান্তে। কিন্তু বন্ড মার্কেটের ধসের পর আর স্থির থাকতে পারেননি। তার উপদেষ্টারা সবাই তাকে অবস্থান থেকে সরে আসতে বলেন। ঘোষণা দেন যে, চীন ছাড়া সবার জন্য আপাতত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে এই রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ।
এর মধ্যেই বাজারে ইতিবাচক বাতাস বইতে শুরু করেছে। চীন ব্যতীত সব দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করায় আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার শেয়ারবাজার। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাপানের নিক্কি এশিয়া সূচকের ৮ শতাংশ উত্থান হয়েছে। মার্কিন শেয়ারবাজারেও বড় উত্থান শুরু হয়েছে।
Comments