পুঁজি বাজার নয়, নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত বিএসইসি

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এণ্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-তে অচলাবস্থা কাটছে না। গত ৫ মার্চ থেকে অবস্থার শুরু। সেদিন চেয়ারম্যানসহ তিন কমিশনারকে টানা চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন কমিশনের কর্মকর্তারা। তারা চেয়ারম্যা্ন ও কমিশনারদের পদত্যাগ করতেও দেন বলে জানা গেছে। নজিরবিহীন সর্বাত্মক কর্মবিরতিও পালন করেন তারা। সেদিন যা ঘটেছিল তা এক কথায় নজিরবিহীন। বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ তিন কমিশনারকে তাদের বোর্ড রুমে দীর্ঘ চার ঘণ্টা আটকে রেখে নানাভাবে লাঞ্ছিত করেছেন কর্মকর্তারা। এ সময় তারা পুরো বিএসইসি'র সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে দেন। এমনকি বোর্ড রুমের এসি এবং লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে পুরো কমিশন অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় ৬ মার্চ বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এরইমধ্যে একজন পরিচালক গ্রেপ্তার হয়েছেন। আর একজন নির্বাহী পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। কর্মকর্তা,কর্মচারীরা কাজে ফঠিরেছেন। কিন্তু এখনও অধস্তন কর্মকর্তাদের আস্থায় আনতে পারেনি কমিশন। একটা চাপা অস্থিরতা বিরাজ করছে সেখানে।
বিক্ষোভের জন্য ১৬ জন কর্মকর্তাকে চিহ্ণিত করে তাদের স্থলে মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে কর্মকর্তা্ চেয়েছেন কমিশন চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের এরকম উদ্যোগ-কে আস্থা ফেরানোর বদলে কার্যত দ্বন্দ্ব তৈরির পরিকল্পনা হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।
নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এরকম অস্থিরতা পুঁজিবাজারকে স্বস্তি দিচ্ছে না। বাজার সংশ্লষ্টরা জানেন, দেশের পুঁজিবাজার ভীষণভাবে সংকুচিত। অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে এই খাত। এ অবস্থায় একটা বড় প্রত্যাশা ছিল সরকার পরিবর্তনের পর পুঁজি বাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিগত সরকারের আমলে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলি রুবায়তের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে কেলেঙ্কারীর বাজারে পরিণত হয়েছিল শেয়ার বাজার।
প্রত্যাশা ছিল নতুন কমিশন সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। কিন্তু সাত মাসে তা দৃশ্যমান হয়নি। দায়িত্ব নেয়ার পর নানা প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেগুলোর কোনটিই এখন দেখা যাচ্ছে না। উল্টো কমিশন এখন ব্যস্ত নিজেকে সামলাতে। বিনিয়োগকারীর সুবিধা, বাজার মধ্যস্থতাকারীদের সমস্যার সমাধান ও বাজারের গভীরতা বৃদ্ধি, বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়াতে কর সুবিধা দেওয়া এবং ভালো কোম্পানিকে তালিকাভুক্তিতে আগ্রহী করতে কর প্রণোদনা বৃদ্ধি করার মতো কাজগুলো কবে করবে কমিশন?
Comments