উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেসকল ব্যায়াম করবেন

উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মতো নীরব ঘাতক রোগগুলো অনেক সময় কোনো উপসর্গ ছাড়াই শরীরে বাসা বাঁধে। একদিন হঠাৎ করেই শরীর ভেঙে পড়ে। কিন্তু সময়মতো সচেতন হলে এবং নিয়মিত কিছু ব্যায়াম চালিয়ে গেলে এগুলোর ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা তরুণ বয়স থেকেই নিয়মিত ব্যায়াম করে আসছেন, বিশেষ করে প্রতি সপ্তাহে ৫ ঘণ্টা মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম করছেন—তাদের ভবিষ্যতে হাই ব্লাড প্রেশার বা কোলেস্টেরলের ঝুঁকি তুলনামূলক অনেক কম। উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত সময়ের চেয়ে এটি দ্বিগুণ।
চলুন জেনে নিই এমন ৫টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ব্যায়ামের কথা, যেগুলো উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল প্রাকৃতিকভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
১. দ্রুত হাঁটা – প্রতিদিন ৪৫ মিনিট, সপ্তাহে ৫ দিন
দ্রুত হাঁটা নিয়মিত করলে রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে এবং সিস্টোলিক প্রেশার (উপরের রক্তচাপ) উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। এটি হাঁটার গতি নয়, বরং ধারাবাহিকতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া দৌড়ের চেয়ে হাঁটায় হাঁটুতে চাপ কম পড়ে, ফলে এটি যে কোনো বয়সের মানুষের জন্য উপযোগী।
২. সাঁতার – সপ্তাহে ৩ দিন, ৩০ মিনিট
সাঁতার শুধু ওজন কমায় না, এটি হৃদযন্ত্রের জন্য দারুণ কার্যকর। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে তিন দিন সাঁতার কাটেন, তাদের রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) উভয়ই কমে। পানির প্রতিরোধ শক্তি হৃৎপিণ্ডকে বাড়তি পরিশ্রম করায়, যা স্বাস্থ্যকর হলেও শরীরে কোনো বাড়তি চাপ ফেলে না।
৩. তাই চি – প্রতিদিন ২০ মিনিট
এই ধীর গতির ব্যায়াম অনেকেই হালকা মনে করেন, তবে এর প্রভাব অনেক গভীর।
তাই চির ধীর ও সচেতন মুভমেন্ট এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায়। বিশেষ করে যাদের মানসিক চাপ বেশি বা ক্লাসিক ব্যায়াম করতে অসুবিধা হয়—তাদের জন্য এটি খুব উপকারী।
৪. সাইক্লিং – সপ্তাহে ৩–৪ দিন, ৪০ মিনিট
মাঝারি মাত্রার সাইক্লিং করলে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ দুটোই কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ছয় মাস ধরে সপ্তাহে ৩–৪ দিন সাইক্লিং করেছেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সাইক্লিং কেবল ব্যায়াম নয়—এটি জীবনের একটি গতি, উদ্দেশ্যমূলক নড়াচড়া।
৫. স্ট্রেন্থ ট্রেনিং – সপ্তাহে ২ দিন, ৩০ মিনিট
অনেকে মনে করেন ওজন উত্তোলন রক্তচাপ বাড়ায়, কিন্তু এটি ভুল। হালকা ওজন বা নিজের শরীরের ওজন ব্যবহার করে সপ্তাহে দুই দিন মাঝারি মাত্রার স্ট্রেন্থ ট্রেনিং করলে বিশ্রামকালীন রক্তচাপ কমে এবং ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ে, যা কোলেস্টেরলও কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়ামের সময় মনোযোগী শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ধাপে ধাপে আগানো গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
Comments