মুখের এই অংশে ব্রণ ফাটানোর ক্ষতি কী?

মুখে ব্রণ হলে অনেকেই অজান্তেই হাত দিয়ে পুঁজ বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই সাধারণ অভ্যাসই হতে পারে গুরুতর বিপদের কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ব্রণ ফাটালে তা শরীরের অভ্যন্তরে ভয়ংকর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি প্রাণনাশও ঘটতে পারে।
ভারতের ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শীনা কাপুর সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
'ডেঞ্জার ট্রায়াঙ্গেল' কতটা বিপজ্জনক: ডা. কাপুর জানান, মুখের 'ডেঞ্জার ট্রায়াঙ্গেল' নামে পরিচিত এলাকাটি সবচেয়ে স্পর্শকাতর। এই অংশটি নাকের দুই পাশ থেকে ঠোঁটের দুই কোণ পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে এমন রক্তনালির অবস্থান রয়েছে, যা সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই এই স্থানে ব্রণ ফাটালে ক্যাভার্নাস সাইনাস থ্রম্বোসিস (CST) নামক প্রাণঘাতী জটিলতা দেখা দিতে পারে। এটি মস্তিষ্কের একটি প্রধান শিরায় রক্ত জমাট বাঁধিয়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারে। যার পরিণতিতে হতে পারে চোখের সমস্যা, পক্ষাঘাত, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত।
ঘরে বসে ব্রণ ফাটানোর ঝুঁকি: অনেকেই ব্রণ দেখলেই পুঁজ বের করতে চান। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবণতা ত্বকে ইনফেকশন ও স্থায়ী দাগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষত গভীর প্রকারের ব্রণ যেমন সিস্ট চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ফাটানো একেবারেই উচিত নয়। এতে ত্বকের ভেতরে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার ঘটে এবং নতুন করে প্রদাহ দেখা দিতে পারে।
সমাধানের উপায়: ডা. কাপুর কিছু সচেতনতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি যেসব বিষয় মানতে বলেছেন তা হলো:
> ব্রণ ফাটানো এড়িয়ে চলুন: চুলকানি বা পুঁজের কারণে চাপ অনুভব করলেও ব্রণ ফাটানো উচিত নয়।
> বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন: ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা ও স্কিনকেয়ার রুটিন গঠনের জন্য চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।
> নিরাপদ স্কিন কেয়ার পণ্য ব্যবহার করুন: সালিসিলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারঅক্সাইডযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করুন, তবে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী।
> ঘরোয়া এক্সট্রাকশনের পরিবর্তে পেশাদার সাহায্য নিন: ব্ল্যাকহেড বা হোয়াইটহেড দূর করতে পার্লারে না গিয়ে স্বীকৃত ক্লিনিকে যান।
ব্রণ ফাটানো হয়তো সাময়িক স্বস্তি দেয়, তবে তার ফলাফল হতে পারে ভয়ানক। বিশেষ করে মুখের সংবেদনশীল 'ডেঞ্জার ট্রায়াঙ্গেল' অংশে হাত না দেয়া সবচেয়ে নিরাপদ। ত্বকের যত্নে সর্বদা পেশাদারদের পরামর্শ গ্রহণ করুন এবং নিজেকে জটিল রোগ থেকে দূরে রাখুন।
Comments