হিটস্ট্রোক হলে যে কাজগুলো করবেন না

গ্রীষ্মের প্রখর রোদে বাইরে বেরোলে আপনি হয়তো পানি পান করেন, ছাতা ব্যবহার করেন—কিন্তু হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ঠিক কী করা উচিত, বা কোন ভুলগুলো এড়িয়ে চলা দরকার, তা জানেন কি? অনেকেই অসতর্কভাবে এমন কিছু কাজ করেন, যা হিটস্ট্রোকের পরে মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। চিকিৎসকেরা বলছেন একটি ভুল সিদ্ধান্তেই ঘটতে পারে বড় বিপদ। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত উঠে এসেছে। চলুন জেনে নিই, হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর কোন ৭টি কাজ একেবারেই করবেন না-
কোনো লক্ষণ উপেক্ষা করবেন না: মাথা ঘোরা, শরীর দুর্বল লাগা, ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া, তীব্র মাথাব্যথা, বমি, বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণগুলো হিটস্ট্রোকের পূর্বাভাস। দেরি না করে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা নিন।
অসুস্থ হয়েও রোদে: অনেকেই হিটস্ট্রোক হওয়ার পরও রোদে থাকেন। এটা বিপজ্জনক। অসুস্থ ব্যক্তিকে ছায়াযুক্ত, ঠান্ডা স্থানে নিয়ে যান এবং বিশ্রামে রাখুন।
পানি না দেয়া কিংবা পানীয় পান: হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ক্যাফিন বা অ্যালকোহল দেয়া বিপজ্জনক। বরং ঠান্ডা পানি, ওআরএস বা নারকেল পানি ধীরে ধীরে খাওয়ান।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন: অনেকে জ্বর ভাবলে অ্যাসপিরিন বা প্যারাসিটামল খেয়ে নেন। কিন্তু হিটস্ট্রোকের জ্বরের সঙ্গে এগুলোর সম্পর্ক নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিছুই খাবেন না।
শরীর ঠান্ডা করার চেষ্টা না করা: প্রথম কাজ হওয়া উচিত শরীরের তাপমাত্রা কমানো। ফ্যান চালান, ভেজা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিন, ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করান—তবে সরাসরি বরফ দেবেন না।
ভারী, আঁটসাঁট পোশাক: হিটস্ট্রোকের সময় ভারী বা সিল্ক জাতীয় কাপড় গরম আরও বাড়িয়ে তোলে। পরুন হালকা, ঢিলেঢালা, সুতির পোশাক যাতে শরীর শ্বাস নিতে পারে।
দেরি করা: অনেক সময় দেখা যায় হিটস্ট্রোক করার পর জ্বর হয়। কখনো রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় বা খিঁচুনি হয়। এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে বাড়িতে বসে থাকবেন না। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান। দেরি মানেই বিপদ।
প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে আমাদের সবারই। তবে একটু সচেতনতা ও সঠিক সিদ্ধান্ত আপনাকে ও আপনার প্রিয়জনকে এই ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে পারে। হিটস্ট্রোক হলে কী করবেন আর কী ভুল করে ফেলবেন না—এই জ্ঞান জীবনের দামে কেনা শিক্ষা হয়ে উঠতে পারে। সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া আর ছোট ছোট ভুল এড়িয়ে চলাই হতে পারে বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার চাবিকাঠি।
Comments