শরীরের মেদ বাড়া মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর

অতিরিক্ত ওজন কিংবা স্থূলতা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে—এ কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু শরীরে অতিরিক্ত মেদ কোথায় কতটুকু জমেছে, সেটাও অনেক সময় বলে দেয় আপনি বিষণ্নতায় ভুগবেন কি না? আর পুরুষ বা নারীভেদে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বা ফ্যাট কেমন ভূমিকা রাখে সে বিষয় উঠে এসেছে একাধিক গবেষণায়। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
সম্প্রতি জর্নাল অব অ্যাফেকটিভ ডিসওর্ডারের এক প্রতিবেদে উঠে এসেছে গবেষণা থেকে পাওয়া কিছু চমকপ্রদ তথ্য। এই বিষয়গুলো নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করছে বিজ্ঞানীদের।
গবেষণায় যা জানা গেছে: চীনভিত্তিক গবেষক দল—ওয়েনজুন গু, কুনমিং বাও, শাওহ্যাং শিয়াং, লিক্সিন ইয়েসহ আরও কয়েকজন গবেষকরা ১০ হাজার ৬৯৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে নিয়ে এক গবেষণা করে। ঐ গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের পূর্ণাঙ্গ শরীর স্ক্যান করে তাদের শরীরের আটটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে জমে থাকা চর্বির পরিমাণ পরিমাপ করা হয়—যেমন: হাত, পা, ট্রাঙ্ক, মাথা, পেট, নিতম্ব ও ঊরু, মাথা বাদে পুরো শরীর। গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের বিষণ্নতার লক্ষণ, দৈনন্দিন অভ্যাস, অর্থনৈতিক অবস্থা, শারীরিক অসুস্থতা এবং জৈবিক উপাদান নিয়েও প্রশ্ন করেন।
বাড়তি মেদ বিষণ্নতার ঝুঁকিও বাড়ায়: গবেষণার ফলাফল যথেষ্ট উদ্বেগজনক। দেখা গেছে, যাদের শরীরে মোট চর্বির পরিমাণ বেশি, তাদের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণও তুলনামূলকভাবে বেশি। বিশেষ করে, পা, নিতম্ব-ঊরু অঞ্চল (গাইনয়েড), এবং মাথা বাদে বাকি অংশে (সাবটোটাল) চর্বি বেশি থাকলে বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এমনকি মাথায় অতিরিক্ত চর্বির উপস্থিতিও বিষণ্নতার সম্ভাবনা বাড়ায় যদিও এই সংযোগ তুলনামূলকভাবে কম।
পুরুষের ক্ষেত্রে বিষণ্নতার ঝুঁকি বেশি: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো—এই চর্বি ও বিষণ্নতার সম্পর্ক পুরুষদের মধ্যে বেশি দৃশ্যমান। অর্থাৎ, নারীদের তুলনায় পুরুষদের শরীরে চর্বি বেড়ে গেলে বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আরও তীব্র হয়। গবেষকরা মনে করছেন, শরীরের গঠন এবং হরমোনের ভিন্নতা এর পেছনে বড় কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু বডি মাস ইনডেক্স নয়, শরীরের কোন অংশে কতটুকু চর্বি জমেছে, সেটিও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। তাই শরীরচর্চা, ঘুম, খাদ্যাভ্যাসসহ নিয়মিত জীবনযাপন বজায় রাখা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও খুব জরুরি।
Comments