কম সময়ের মধ্যে ৭ কেজি ওজন কমাবেন যেভাবে
ওজন কমাতে মানুষ কত কিছুই না করে। ব্যায়াম থেকে শুরু করে ডায়েট সব মেনেও অনেক সময় ফল পাওয়া যায় না। কেউবা ডায়েট করে অসুস্থ হয়ে যান। এতে অনেকেই হতাশ হয়ে যান। ওজন কমানোর ডায়েট পরিকল্পনা শেয়ার করেছেন ভারতীয় পুষ্টিবিদ তনু গোস্বামী। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে তিনি একটি ডায়েট শেয়ার করেছেন যা অনুসরণ করলে সহজেই ২১ দিনে ৭ কেজি ওজন কমানো সম্ভব।
২১ দিনের রুটিন: তনু গোস্বামী বলেন ওজন কমাতে চাইলে নিয়মের মধ্যে থাকতে হবে। আপনার খাবার এবং ব্যায়ামের পরিকল্পনা করতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে সেই রুটিন মেনে চলতে হবে। তিনি বলেন প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করতে হবে। যার অর্থ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় খাওয়া এবং বাকিটা সময় খাওয়া থেকে বিরত থাকা। প্রতিদিন ১০ হাজার স্টেপ হাঁটতে হবে সেই সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চা। ঘুমের বিষয়ে সচেতন হতে বলেছেন এই পুষ্টিবিদ। তিনি বলেন প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে।মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। নিয়ম করে দিনের শুরু থেকেই পানি পান করতে হবে। ডায়েট চলার সময় প্রতিদিন ৪ লিটার পানি পাকতে হবে। এমনকি ওজন অনুযায়ী প্রোটিন খেতে হবে। প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১ গ্রাম প্রোটিন।
কেন ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং: ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বলতে দিনের নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টা খাবার খাওয়া এবং বাকিটা সময় না খেয়ে থাকাকে বুঝানো হয়। পুষ্টিবিদ তনু গোস্বামী জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি ওজন কমাতে দারুণ কাজে আসে। কেবল ওজন নিয়ন্ত্রণ নয় এর আরও একাধিক উপকারিতা রয়েছে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের উপকারিতা:
- ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ওজন কমানো ত্বরান্বিত করে। খাবার গ্রহণের চক্রটি শরীরের মেদ দ্রুত কমায়।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এই পদ্ধতি। কারণ এটা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
- মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, যা শক্তি ব্যয় বাড়ায়।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেও ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ফাস্টিং ত্বককে সজীব ও উজ্জ্বল করে তোলে।
- হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে শরীরের অস্বস্তিকর ফোলাভাব দূর করে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর সেরা পদ্ধতি: ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করায় শরীর পুনর্গঠিত করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ তনু গোস্বামী ফাস্টিংয়ের তিনটি জনপ্রিয় পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
১৬:৮ পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে দিনে ৮ ঘণ্টা খাবার খাওয়া যায় এবং বাকি ১৬ ঘণ্টা খাওয়া যাবে না। আপনি দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা, সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা, বা বিকেল ১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন। এটি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের সবচেয়ে সাধারণ ও জনপ্রিয় পদ্ধতি।
৫:২ পদ্ধতি: এটা কিছুটা কঠিন পদ্ধতি। এতে সপ্তাহে ৫ দিন স্বাভাবিক খাবার খাওয়া হয় এবং বাকি ২ দিন কম ক্যালরির খাবার খেতে হয়। যারা দ্রুত ফল পেতে চান, তাদের জন্য এটি কার্যকর হতে পারে।
১৪:১০ পদ্ধতি: যারা প্রথম ডায়েট করতে যান তাদের জন্য এটা সেরা পদ্ধতি। এতে দিনে ১০ ঘণ্টা খাবার খাওয়া যায় এবং বাকি ১৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হয়। নতুনরা সহজেই ফাস্টিং করতে পারেন। এতে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিও কম।
পুষ্টিবিদ ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং চলার সময় খাদয় তালিকা থেকে দুধ, চা কিংবা কফি, ফল বা ফলের রস, নারকেলের পানি এবং চুইংগাম খেতে বারণ করেছেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আপনার সুবিধা মত ফাস্টিং করতে হবে। আর শুরুতেই বুঝতে হবে আপনি পারছেন কিনা। সবচেয়ে ভালো হয় একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে ফাস্টিং করলে তাহলে সে আপনার শরীরের ধরণ অনুযায়ী সেরা ফাস্টিং করার সময় বলে দিতে পারবেন।