নিবন্ধন পেতে আবেদন ৬৫টি, নতুন দল গড়ার হিড়িক

৬৫টি নতুন রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে চায়। ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে চাওয়া দলগুলোর বেশিরভাগেরই নেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ন্যূনতম সাংগঠনিক কার্যক্রম তো দূরের কথা, কমিটি কিংবা কর্মীও নেই। এরপরও নিবন্ধন চাইছে কেন?
পরপর দুইবার আবেদন করেও ব্যর্থ। এবার নিবন্ধন পাওয়ার আশা 'বাংলাদেশ বেকার সমাজ'র। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ধানমন্ডির ক্রিসেন্ট রোডের ১৩১/১/এ নম্বর বাসা। গণমাধ্যমকর্মী আসার খবরে হন্তদন্ত হয়ে চলে অফিস গোছানোর কাজ। দলটির সভাপতি নিউমার্কেটের দোকানি হাসান।
হাসান বলেন, 'আমাকে সবাই বেকার বন্ধু বলে ডাকে। আপনি নিউ মার্কেট গিয়ে যে কাউকে বললেই হবে বেকার হাসান কে, তারা আমাকে দেখিয়ে দেবে। বেকার হাসান নামেই আমি সবার কাছে পরিচিত। দেশের ক্রান্তিলগ্নে আমি দেশের মানুষের জন্য কথা বলে যাই।'
ধানমন্ডি দুই নম্বর সড়কের প্রথম বাড়ি। দ্বিতীয় তলায় উঠতেই দেখা যায় কোচিং সেন্টার। এখানেই প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা দিয়েছে ফরওয়ার্ড পার্টি। কেয়ারটেকার জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক দলটির লোকজন। গত ৮ মাসে এ রুম কোনোদিন খোলা দেখেননি।
দেয়ালে টানানো পোস্টারের ঠিকানা অনুযায়ী 'জনতার কথা বলে' নামক দলের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় পরিত্যক্ত তালাবদ্ধ ঘর।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয় 'জনতার কথা বলে'র সভাপতি মোহাম্মদ নাঈম হাসানের সঙ্গে।। আপনি শেষ কবে অফিসে এসেছেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আজও অফিসে গিয়েছি। গিয়ে আধা ঘণ্টা বসে থেকে চলে এলাম।'
নির্বাচন কমিশনে জাস্টিজ পার্টি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জনশক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের যে ঠিকানা দেয়া হয়েছে, সেখানে অস্তিত্ব নেই কোনো অফিসের।
বিল্ডিংয়ের বাসিন্দারা জানান, তারা এমন কোনো পার্টির নাম শুনেননি। এমনকি তাদের ভবনে এমন কোনো দলের অস্তিত্ব নেই।
বাংলাদেশ জনগণের দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমাদের নিজস্ব অফিস আছে। আমাদের ঠিকাদারি অফিস আছে। এখনো দলের নিবন্ধন পাইনি। তাই সাইনবোর্ড লাগাইনি।'
পুরান পল্টনের ইব্রাহিম ম্যানশন। ভাসানী জনশক্তি পার্টি খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেল ভাসানী অনুসারী পরিষদ। তিন সপ্তাহ আগে দলের নাম পরিবর্তনের কথা জানান মুখপাত্র। দলের গঠনতন্ত্র চাওয়ায় পড়লেন বিপাকে।
দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দলের নাম রাখা হয়েছে বাংলাদেশ শান্তির দল। এর প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। একশ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি থাকার কথা বললেও নথি দেখাতে ব্যর্থ তিনি।
বাংলাদেশ শান্তির দলের সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ সহিদ বলেন, 'একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, একটি গঠনতন্ত্র ও একটি কেন্দ্রীয় অফিস। এর মধ্য দিয়ে আপনারা নিবন্ধন দেন। আমার বিশ্বাস দ্রুতই নির্বাচন কমিশিন ও জাতির শুভবুদ্ধির উদয় হবে।'
আগামী ২২ জুন শেষ হচ্ছে ইসিতে নতুন দল নিবন্ধনের আবেদনের সময়।
Comments