ফের বিয়ে না করতে চাওয়ার কারণ জানালেন শাবনূর
নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর। একসময় পর্দায় তার উপস্থিতি মানেই ছিল দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। তবে এখন আর পর্দায় নিয়মিত দেখা যায় না তাকে। আর এর অন্তরালে ব্যক্তিজীবনে ৪৫ বসন্ত পেরিয়ে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ৪৬-এ পা রাখলেন এ নায়িকা।
কয়েক দশকের বেশি সময় ধরে দর্শকহৃদয়ে জায়গা করে নেয়া এই নায়িকাকে এখন খুব একটা দেখতে পান না দর্শকরা। শুরুতে ক্যারিয়ারের স্বর্ণালী সময় থাকলেও হঠাৎ পাল্টে যায় সব। ব্যক্তিগত জীবনের বাস্তবতার কাছেই সব এলোমেলো হয়। তবে তার অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তাকে এখনো আইডল মনে করেন বর্তমান সময়ের অনেক নায়িকা।
এবার নিজের জন্মদিন, অর্থাৎ জীবনের বিশেষ দিনটি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন চিত্রনায়িকা শাবনূর। তাতে স্বাভাবিকের থেকে আক্ষেপই বেশি করেছেন। তাহলে কী ভালো নেই এই চিত্রনায়িকা? এমন প্রশ্ন থাকলেও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে শাবনূর বলেন, দীর্ঘ দেড় যুগের ক্যারিয়ারে আমার ওপর যতটা ঝড়ঝাপটা এসেছে, তা পৃথিবীর অন্য কোনো শিল্পীর বোধহয় হয়নি।
এ নায়িকা বলেন, প্রথম সিনেমা 'চাঁদনী রাতে'র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, নায়ক সালমান শাহ, নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস ও এক বিদেশি নাগরিককে আমার সঙ্গে জড়িয়ে যেসব মিথ্যা সম্পর্কের গুঞ্জন, সালমান শাহর মৃত্যুতে অভিযুক্ত হওয়া, এফডিসির বিভিন্ন সমিতি কর্তৃক একাধিকবার ব্যান হওয়া―কী ফেস করতে হয়নি এই আমাকে। আবার পারিবারিক নানা টানাপোড়েনে জীবন ছিল অতিষ্ঠ।
বিচ্ছেদই তার জীবনকে অতিষ্ঠ করে দেয়ার মূল কারণ ছিল বলেও জানিয়েছেন শাবনূর। আবার সেসব থেকে সামলেও নিয়েছেন নিজেকে। তার ভাষ্যমতে, অন্য কেউ হলে বোধহয় পাগল হয়ে যেত, না হয় সমস্যা ভুলে থাকার জন্য মাদকের আশ্রয় নিতো বা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতো। কিন্তু আমি সেসব না করে সব নেগেটিভকে মনের জোরে পাশ কাটিয়ে জীবনকে ইতিবাচকভাবে গড়ে তুলতে পেরেছি।
এ অভিনেত্রীর জীবনে মূলত বিচ্ছেদ থেকেই সংসার জীবন নিয়ে তিক্ততা। দৃঢ় মনোবল থেকে নিজেকে সামলে নিলেও আগামীতে আর সাংসারিক হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই তার। এ ব্যাপারে হতাশা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার আর সংসারী হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া যেকোনো নারীর জন্য এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। এ জন্য বাধ্য হয়েই ডিভোর্স দিতে হয়েছে স্বামীকে। তবে আমার আর বিয়ের কোনো ইচ্ছা নেই। এর কারণ হচ্ছে একমাত্র ছেলে আইজানকে প্রতিষ্ঠা করা। তাকে একজন সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।
এছাড়া একসময়ের জনপ্রিয় এই চিত্রনায়িকা কাজে ফেরার ব্যাপারে বলেন, গত বছরই 'রঙ্গনা' নামের সিনেমায় কাজ শুরু করেছিলাম। বিভিন্ন কারণে এখনো সেটির কাজ শেষ হয়নি। তবে শিগগিরই কাজে ফেরার ইচ্ছা রয়েছে আমার।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী অনীক মাহমুদের সঙ্গে আংটি বদল হয়েছিল শাবনূরের। পরের বছর ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে হয় তাদের। তারপর থেকে পর্দায় ধীরে ধীরে অনেকটা অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। এরপর স্বামীকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনীক-শাবনূর দম্পতির ছেলে আইজান নিহানের জন্ম হয়। আর ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি অনীকের সঙ্গে বিচ্ছেদের খবর জানান এ চিত্রনায়িকা।