রেলপথ চালুর দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরার বাসিন্দারা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের শেষ জেলা সাতক্ষীরা। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ জেলা, এছাড়া সুন্দরবনকে ঘিরে রয়েছে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা। কলকাতা থেকে দূরত্ব কম হওয়াতে সাতক্ষীরার ভোমরা বন্ধর থেকেও সরকার শত কোটি টাকা রাজস্ব পাচ্ছে প্রতিবছর। সমৃদ্ধ এ জেলার মানুষের এখন একটাই দাবি- রেলপথ।
সাতক্ষীরার সম্ভাবনাময় খাতগুলোর অন্যতম হচ্ছে মৎস্য ও কৃষি। বিশেষ করে চিংড়ি, কাঁকড়া এবং রপ্তানিযোগ্য সুস্বাদু মাছ ইতিমধ্যেই দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইউরোপসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাজারে স্থান করে নিয়েছে।শুধু মৎস্যই নয়, সাতক্ষীরার হিমসাগর আম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত একটি ব্র্যান্ড।
পাশাপাশি কুল, মালটা, শাকসবজি ও নানান মৌসুমি ফল উৎপাদনের দিক থেকেও সাতক্ষীরা স্বনির্ভর। ভৌগলিক কারণে কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ এই জেলা বর্তমানে দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে, যা পশুপালন খাতেও এর অগ্রগতির প্রমাণ। তবে এই সমস্ত সম্ভাবনা বাস্তবায়নে অন্যতম অন্তরায় হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
দেশের প্রান্তিক এই জেলাটি এখনও রেলপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সাতক্ষীরাবাসীকে রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায় যাতায়াত করতে একমাত্র ভরসা করতে হয় সড়কপথের উপর, যা প্রায়শই সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টকর। ফলে কৃষিপণ্য পরিবহন ও যাত্রী চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
দীর্ঘদিন ধরে সাতক্ষীরার কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজ যশোর অথবা খুলনা থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেলপথ চালুর দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের মতে, রেলপথ চালু হলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নই হবে না, বরং সুন্দরবন ঘিরে গড়ে ওঠা পর্যটন খাতেও নতুন মাত্রা যোগ হবে। একইসঙ্গে কৃষিপণ্য ও মাছ দ্রুত সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে, যা এই এলাকার অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে এই বিষয়ে গত এক সপ্তাহে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। সরাসরি ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ কল ও এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি কিংবা ফোন রিসিভ করেননি।
সাতক্ষীরা সচেতন নাগরিক মহল মনে করছেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের আন্তরিক সদিচ্ছা থাকলে রেললাইন বাস্তবায়ন সম্ভব।
Comments