কোটি টাকা ব্যয়ের পরও ঠিক হয়নি খুলনার ড্রেনেজ ব্যবস্থা

হালকা বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় খুলনার শহরের নিম্মাঞ্চল। বিশেষ করে, নগরীর প্রধান সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে গেছে, যা জনজীবনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
খুলনা শহরের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে শিববাড়ি মোড়, রয়েল মোড়, ময়লাপোতা, ডাকবাংলা, রূপসা ফেরিঘাট, বয়রা বাজার, নতুন রাস্তা মোড় এবং বাস্তহারা কলোনির মতো এলাকায় বেশি জলবদ্ধতা দেখা গেছে। বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
কিছু কিছু এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতে পারছে না, যার ফলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। আর ভারি বৃষ্টি হলেতো কথাই নেই। অথচ গত ছয় বছরের অধিক সময় ধরে চলছে নগরীতে রাস্তা ও ড্রেন মেরামতের কাজ। প্রায় এক হাজার পাঁচ শত কোটি টাকা ব্যয়ে চলছে এসব কাজ। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়েও যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছেনা। ফলে জলবদ্ধতা থেকে মুক্তি মেলেনি নগরবাসীর। প্রকল্পের সময় বার বার বাড়ানো ও সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় তৈরী হয়েছে এই পরিস্থিতি। এছাড়া প্রকল্পের কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন হলেও নগরবাসীর দুর্ভোগ কতটা লাঘোব হবে তা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ।
সোমবার রাত থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় খুলনাতে। এতেই রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। সড়কে যানবাহন বন্ধ হয়ে যায় অনেকের। বিড়ম্বনায় পড়ে পথচারীরা। পানি ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। পরিস্থিতি এমনই হয় যে ঘরের মধ্যেও থাকা দায় হয়ে পড়ে। মালামাল উপরে রেখে ঘরের পানি সেচে বের করার প্রচেষ্টা অনেকেরই।
এক জন স্কুল শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, উন্নয়নের নামে বার বার অর্থ খরচ হলেও সুফল মেলেনা কেননা সামান্য বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগের শেষ থাকেনা। যা আগে ছিল এখনও আছে।
কেসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম বলেন, নগরীরবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জিওবির ফান্ডে প্রায় ৮২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প এবং আরও ৬৫২ কোটি টাকা ব্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা উন্নয়ন ও পুনবিন্যাস নামে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় জলাবদ্ধতা থেকে সুফল মিলছে না। এছাড়া পাম্পের মাধ্যমে পানি নিস্কাশনসহ নানা উদ্যোগের কথা জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, কেসিসির একটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৫৮ কিলোমিটার ড্রেন ও ২৩ কিলোমিটার খাল সংস্কার হবে। আর অপর প্রকল্পে রাস্তা উন্নতকরণ করা হবে ৩০৩ কিলোমিটার। দুটি প্রকল্পেরই মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। বর্ধিত মেয়াদে যা শেষ হওয়ার কথা চলতি মাসে।
Comments