সিজার ছাড়াই সন্তান প্রসব করিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শামসুন্নাহার

ঈদের ছুটিতেও চিকিৎসাসেবা থেমে থাকেনি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায়। উপজেলার উলাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এক প্রসূতির স্বাভাবিক (নরমাল) পদ্ধতিতে সন্তান প্রসব করিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন কেন্দ্রটির পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শামসুন্নাহার। এলাকায় তিনি এখন "গরিবের ডেলিভারি ডাক্তার" নামে পরিচিত হয়ে উঠেছেন।
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির মধ্যেই, গত ৯ জুন দড়িকয়ড়া গ্রামের আবুল হোসেনের স্ত্রী বিলকিস আক্তারের প্রসব ব্যথা শুরু হলে তার স্বজনরা শামসুন্নাহারকে ফোন করেন। তাৎক্ষণিক সাড়া দিয়ে তিনি প্রসূতিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসার নির্দেশ দেন। পরে শামসুন্নাহার একাই নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে সফলভাবে স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে কন্যা সন্তান প্রসব করান।
তিনি বলেন,"ঈদের ছুটিতে ছিলাম, কিন্তু খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে প্রসূতিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনতে বলি। দায়িত্ব শুধু চাকরি নয়, এটা আমার মানবিক কর্তব্য মনে করি। মা ও নবজাতক দুজনেই এখন সুস্থ আছেন।"
তিনি আরও বলেন,"একজন শিশু যখন ভূমিষ্ঠ হয়, তখন আমাদের আনন্দের সীমা থাকে না। ঈদের ছুটির চেয়ে আমার কাছে বড় ঈদ হলো—একজন প্রসূতির পাশে থেকে তাকে নিরাপদে সন্তান জন্মদানে সহায়তা করা।"
সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা লক্ষ্মী রানী দাস বলেন,"এতে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করে। একজন মাকে সুস্থ রেখে বাচ্চাকে পৃথিবীতে আনা—এটা আমাদের কাজের সবচেয়ে আনন্দময় দিক।"
পরিবার কল্যাণ সহকারী কামরুন্নাহার শেলী বলেন,"ছুটির মধ্যে সফল ডেলিভারির ঘটনা আমাদের মন ভালো করে দিয়েছে। শামসুন্নাহার আপার দক্ষতা ও সুনাম রয়েছে এই এলাকায় অনেকদিন ধরেই।"
সহকারী সালমা নার্গিস বলেন,"গর্ভবতী মায়েদের জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করি আমরা। তাদের পাশে থেকে সাহস দিই। সন্তান প্রসবের সময় তাদের পাশে থাকতে পারা আমাদের দায়িত্ব এবং ভালোবাসা।"
এ বিষয়ে উলাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. পারভেজ মিয়া বলেন,"আমাদের কেন্দ্রে ছুটির সময়ও সন্তান প্রসব হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এখানে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবিকারা খুবই পরিশ্রমী ও সেবাপ্রিয়। এলাকাবাসীর আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে আমাদের কেন্দ্রটি।"
Comments