বরিশালে খাল পুনঃউদ্ধারে সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান
বরিশালে ঐতিহ্যবাহী ভাটারখাল পুনঃ উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে সিটি করপোরেশন। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
এসময় সিটি করপোরেশনের খাল এবং জয়গা দখল করে গড়ে তোলা ৯টি স্থাপনার অংশ বুল্ডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা। গুঁড়িয়ে দেয়া স্থাপনার মধ্যে বসত বাড়ির দেয়াল, সীমানা প্রাচীর এবং স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান রয়েছে।
সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ শাখার কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরে খাল, ড্রেন এবং সরকারি জমি দখল করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চলছে।
এর অংশ হিসেবে গত ২০ দিন আগে থেকে সিটি করপোরেশনের খালের জমি পরিমাপ করে ধাপে ধাপে বিভিন্ন সময় বাড়ির মালিকদের মাইকিং ও মৌখিকভাবে তাদের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থাপনা মালিকরা কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেয়ায় মঙ্গলবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সিটি করপোরেশন। এসময় ৯টি বাড়ির সামনের অংশের দেয়াল, সীমানা প্রাচীর বুল্ডোজার দিয়ে ভেড়ে ফেলেছেন তারা। পাশাপাশি জিলা স্কুলের সামনে ব্রাউন কম্পাউন্ড পর্যন্ত প্রায় ৪০ ফুটের একটি সীমানা প্রাচীরও ভেঙে ফেলা হয়েছে। উচ্ছেদের কারণে নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি, ড্রেন গুলো পরিস্কার করা সহজ হবে। একই সাথে নগরীর জলাবদ্ধতাও নিরসন হবে বলে জানান উচ্ছেদ শাখার এই কর্মকর্তা।
যদিও ঈদের আগে এমন অভিযানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিকরা। তাদের অভিযোগ, স্থাপনার অবৈধ অংশ সরিয়ে নেয়ার জন্য সময় চাইলেও তা দেয়নি সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনামলে বরিশাল অঞ্চলে ১০৮টি খালের অস্তিত্ব ছিলো। পাকিস্তান আমলে সেই সংখ্যা কমে গিয়ে হয় ৪৬টি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বরিশাল নগরীতে ২২ থেকে ২৩টি খালের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। বর্তমানে অস্তিত্ব রয়েছে মাত্র ৬টি খালের। যেগুলোর বেশিরভাগই এখন নগরবাসির বাসা-বাড়ির সুয়ারেজ লাইনের পানি কিংবা ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ব্যবহৃত হয়। অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি ও দোকানপাট। তাই শুধুমাত্র ভাটারখাল নয়, দখল দুষণে হারিয়ে যেতে বসা সবগুলো খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
Comments