কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, অনিয়মের অভিযোগ সিএইচসিপি'র বিরুদ্ধে

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের মানিকনগর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) শিবানী রায়ের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, রোগীদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে গেলে অভিযোগের সত্যতা পান শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) বিলকিস আক্তার। অনুসন্ধানেও নিয়মিত উপস্থিত না হওয়া, ওষুধ সরবরাহ না করা ও রোগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য সরকারি বরাদ্দের ওষুধ উত্তোলন করেননি শিবানী রায়। অথচ সরকার এই ক্লিনিকগুলোতে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিমাসে ঠান্ডা, জ্বর, গ্যাস্ট্রিক, এলার্জি, ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্মনিয়ন্ত্রণসহ ২২ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়।'
স্থানীয়রা জানান, চলতি এপ্রিল মাসের ২০ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত ক্লিনিক বন্ধ ছিল। শিবানী রায় অনিয়মিতভাবে ক্লিনিকে উপস্থিত হন। মাঝে মধ্যে এলেও ১-২ ঘণ্টার বেশি থাকেন না। এতে চিকিৎসা সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার মানুষ। রোগীরা অভিযোগ করেছেন, শিবানী রায় রোগীদের ক্লিনিকের ভেতরে প্রবেশ করতে দেন না, পাঁচ ফুট দূর থেকে কথা বলেন, ওষুধও সরবরাহ করেন না। কেউ এসব বিষয়ে কথা বলতে গেলে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ মোল্লা বলেন, "উনি নিয়মিত ক্লিনিকে আসেন না। আসলেও কয়েক মিনিট থেকে চলে যান। ওষুধ চাইলে ঘুরিয়ে দেন।" আরেক বাসিন্দা সুবল চন্দ্র বলেন, "আমি চার-পাঁচ দিন ক্লিনিকে গিয়েছি, কিন্তু কখনও উনাকে পাইনি।"
তাছলিমা আক্তার নামে একজন রোগী বলেন, "বাচ্চার জন্য ওষুধ নিতে গিয়েছিলাম। উনি খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। কারো সাথেই ভালো ব্যবহার করেন না।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবানী রায় বলেন, "কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। নয় মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় মন-মেজাজ ঠিক থাকেনা।" তবে নিয়মিত উপস্থিত না থাকা, ওষুধ বিতরণ না করা ও সরকারি বরাদ্দের ওষুধ উত্তোলন না করার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক বিলকিস আক্তার বলেন, "স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।"
এ প্রসঙ্গে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও মানিকগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, "বিষয়টি অবগত হয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত সিএইচসিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
Comments