ঢাকা জার্নালে সংবাদ প্রচারের পর শীতার্তদের পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলস্টেশনে শীতের মধ্যে পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় শুয়ে আছে রেহেনা বেগন সহ ছিন্নমূল মানুষ। তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় কনকনে হাড় কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। এরকম শিরোনামে ঢাকা জার্নালে প্রতিবেদন প্রচারের পর শীতের মধ্যে অসহায় ছিন্নমূল মানুষ যাতে শীতে কষ্ট না করে সেজন্য মধ্যরাতে উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম, বস্তি ও রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা ছিন্নমূল শীতার্তদের গরমের উষ্ণতা দিতে কম্বল নিয়ে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত ।
পরে তিনি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে গভীর রাতে শুয়ে থাকা শারীরিক প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ ও অসহায় ছিন্নমূল মানুষের শরীরে কম্বল জড়িয়ে দেন।
গভীর রাতে অপ্রত্যাশিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে থেকে কম্বল পেয়ে অনেক ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষ তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। এ সময় আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত তাদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের গায়ে গরমের উষ্ণতা দিতে কম্বল জড়িয়ে দেন।
কম্বল পেয়ে ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধা ভিক্ষুক আমেনা খালা বলেন, 'প্রচন্ড শীতের কারণে খুব কষ্টে আছিনু। তাও একটা কম্বলও কেউ দেয়নাই। শ্যাষ রাতে আইজ স্যারের হাতত থ্যাকে একটা কম্বল পাইয়্যাছি। এটাতেই হামার শীত চলি যাবে।'
শারিরীক প্রতিবন্ধী রেহেনা খাতুন বলেন, 'কুনো মতে ছেড়াছুট্যা কাপড় আর পলিথিন জড়াই ছিনু। হামার চেয়ে অসহায় মানুষ আর কেউ নাই। হাড় কাঁপানো শীতে খুব কষ্টে আছিনু। কিন্তু স্যারে একটা কম্বল দিলো। হামি দিনে ভিক্ষা করি আর রাতে ষ্টেশন থাহি। স্যার বেটাডার কম্বল পেয়ে হামার অনেক উপকার হলো।
মধ্য রাতে কম্বল বিতরণ করার সময় উপস্থিত ছিলেন, উল্লাপাড়ার সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত সুত্রধর, মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, উপজেলা প্রৌকশলী আবু সায়েদ, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঘল সহ স্থায়নীয় ছাত্র সমন্বয়কের প্রতিনিধিরা সহ প্রমুখ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, তীব্র শীতে পলিথিন জড়িয়ে রাত পাড় করছে রেহেনা খাতুন এমন একটি সংবাদ ঢাকা জার্নালে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে। পরে তাৎক্ষণিক ভাবে মধ্য রাতে কম্বল নিয়ে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। তীব্র শীতে গরমের উষ্ণতা দিতে মধ্য রাতে ঘুরে ঘুরে খেটে খাওয়া দিন মজুর ও ছিন্নমূল শীতার্ত ৩৫ জন মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র দেওয়া হয়। ঢাকা জার্নালের প্রতিবেদক ময়নুল হোসাইনের এমন কাজ সত্যি প্রসংসার দাবিদার।