যে ভাবে বদলে গেলো কৃষক মাহমুদার জীবন
রংপুরের কুতুবপুরের বাসিন্দা মাহমুদা বেগম। ৪৪ বছর বয়সী কৃষক মাহমুদা বেগম ৩০ বিঘা জমির মালিক। যেখানে তিনি আম, ধান এবং ভুট্টা চাষ করতেন। কিন্তু ২০২০ সালের মারাত্মক বন্যায় তার সমস্ত জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মাহমুদা বড় ধরণের আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েন।
তিনি ২০২০ সালের বন্যার ক্ষতির পরে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখলেও পরবর্তী বছরগুলোতে তা আর সম্ভব হয়নি। কারণ লাগাতার কীটপতঙ্গ, রোগ এবং আরেকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ তার ঘুরে দাঁড়ানোর পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
কৃষক মাহমুদা জানান, বর্তমানে কৃষি একটি উচ্চ-ঝুঁকির কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা যায়, গত ১০ বছরে, বাংলাদেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অনিয়মিত জলবায়ুর কারণে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ফসল হারিয়েছে। ধান, পাট, এবং গমের মতো ফসল দেশের জিডিপি এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও কিন্তু তারা প্রকৃতির অনিশ্চয়তার করুণায় রয়েছে।
তবে এই ক্ষতি এবং অনিশ্চয়তার চক্র থেকে কৃষকদের বের করে নিয়ে আসতে কৃষি বীমার গুরুত্ব বাড়ছে। যাতে করে কৃষকরা দুর্যোগের পরও চাষাবাদ চালিয়ে যেতে পারছেন। তেমনি ভাবে কৃষক মাহমুদার পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স।
সিংএন্টা রিটেইলার থেকে ফসল বীমার কথা শুনে, এই বীমা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন মাহমুদা বেগম। সেই সিদ্ধান্ত তার জীবন পরিবর্তন করে দেয়। যখন বন্যা আবারও তার ফসল ধ্বংস করে দেয়, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স তার পাশে দাঁড়ায়। তার আবেদন দ্রুত গ্রহণ করে তাকে গবাদি পশু কিনতে সহায়তা করে, তার আয়ের উৎসকে ত্বরান্বিত করতে ও একটি ভালো ভবিষ্যতের জন্য তাকে সার্বিক সহযোগিতা করে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স। তাই মাহমুদা গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং অন্য কৃষকদের এই ইন্স্যুরেন্স গ্রহণে উৎসাহিত করছেন।
উল্লেখ্য, কৃষি বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ১৩% অবদান রাখে এবং প্রায় ৪০% জনসংখ্যাকে কর্মসংস্থান দেয়। তবে, এই খাতটি সর্বদা প্রাকৃতিক দুর্যোগ—বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা এবং কীটপতঙ্গ—যা গত এক দশকে বিপুল আর্থিক ক্ষতি করেছে। বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এর তথ্যমতে, ২০১৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত, প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি কৃষি উৎপাদন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা কৃষকদের বিপর্যস্ত করেছে। তবে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স এর বীমা কার্যক্রমে কৃষকরা আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
গত সাত বছরে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কৃষিতে যে ভূমিকা রেখেছে:
• ১৩ লক্ষ কৃষককে বীমা দেয়া হয়েছে।
• ২ লক্ষ কৃষক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, যার মূল্য ১৪.৫ কোটি টাকা।
• এই বীমা ৯ লক্ষ একর জমির সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে।
• প্রায় ৪৯ লক্ষ মানুষের জীবন ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে এই বীমা।
• ৫ লক্ষ'র বেশি আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং ফসলের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
• ৪২টি জেলায় গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স সেবা পৌঁছে দিয়েছে।
• ১০৩টি সচেতনতা কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়েছে।