বালুবাহী বাল্কহেড থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় ও মারধরের অভিযোগ

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ডাকাতিয়া নৌপথে নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে গিয়ে অবৈধ উপায়ে বালুবাহী বাল্কহেড থেকে ইজারার টোল (চাঁদা) আদায়ের অভিযোগ করেছেন চাঁদপুর জেলা বালুবাহী নৌযান মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের নেতারা।
বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে ইজারা সীমানার বাইরে গিয়ে এবং সরকারি সিদ্ধান্ত থেকে দ্বিগুণ, কখনো তিনগুণও টোল (চাঁদা) আদায় করছেন বলেও জানান সংগঠনের নেতারা। প্রশাসন বলছে, অতিরিক্ত টোল আদায় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্প্রতি সরেজমিনে জেলা বালুবাহী নৌযান মালিক সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
জেলা বালুবাহী নৌযান মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ জানায়, সম্প্রতি ইয়াছিন আরাফাত নামে জেলা প্রশাসন হতে লঞ্চঘাট/টেম্পুঘাট/বোটমহলের তথ্যে ইজারা নেন।
ইজারায় উল্লেখ রয়েছে ৮৩ নং মকিমাবাদ মৌজার ডাকাতিয়া নদীর উত্তরপাড় মৌজায় রনি সিনেমা হল থেকে পৌর হকার্স মার্কেট ঘাটলা পর্যন্ত। এবং নদীর দক্ষিণপাড় ডাকাতিয়ারচর মৌজায় হাজীগঞ্জ ও রামগঞ্জ ব্রিজের দক্ষিণ অংশ পর্যন্ত, সীমানায় মালামাল খালাস করলে সরকারি তালিকা অনুসারে টোল আদায় করতে পারবে। উল্লিখিত সীমানা ব্যতীত অন্য কোথাও ইজারা নেওয়া ব্যক্তিরা টোল (চাঁদা) আদায় করতে পারবে না।
তবে টোল আদায়কারীরা নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে এবং নদীপথে বাল্কহেড থাকা অবস্থায় টোল (চাঁদা) আদায় করেন।
সমিতির নেতারা বলেন, সরকার কর্তৃক যে ইজারার সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে, তারা সীমার বাইরে গিয়েও অবৈধভাবে আমাদের বাল্কহেড থেকে টোল (চাঁদা) আদায় করছে একটা পক্ষ। সরকারি তালিকা অনুযায়ী ৪০০-৮০০ টোলের টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে আদায় করা হয় ৮০০-৫০০০ টাকা করে। এক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন কৌশল অনুকরণ করছে। তারা প্রশাসনকে দেখাতে একটি অরিজিনাল রসিদ ব্যবহার করে। সঙ্গে আরেকটি আদায় রসিদ দিচ্ছে। অনেক সময় অবৈধ উপায়ে চাঁদা আদায় করতে গিয়ে বাল্কহেডে থাকা আমাদের স্টাফদেরও মারধর করেন।
এতে করে তাদের সীমানায় বাইরের অনেক বাল্কহেড আসতে চায় না। যার কারণে আমাদের ব্যবসা করতেও প্রচন্ড বেগ পেতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে অবৈধ চাঁদা বন্ধ করতে প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড বরাবার আমরা স্মারকলিপি প্রদান করি। তাতে কোনো লাভ হয়নি বলে জানান।
সমিতির নেতাদের দাবি, অবৈধভাবে চাঁদা আদায় বন্ধের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
উল্লিখিত বিষয়ে ইজারার ডাক নেওয়া ইয়াছিন আরাফাত অনিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অনেকেই মিলে ইজারা নিয়ে থাকি। আমাদের প্রশাসন ডেকেছিল, আমরা ওনাদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছি। এ বিষয়ে তারা আমাদের সঙ্গে আবারও কথা বলতে পারেন।
অতিরিক্ত টোল আদায় বা স্টাফদের মারধরের যে বিষয়টি বালুবাহী নৌযান মালিক সমবায় সমিতি নেতারা দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের ইজারার সকল কাজ আইনের মধ্যে থেকেই করছি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে তারা স্মারকলিপি দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ইজারাদারদের আমরা ডেকেছি এবং তাদের বলা হয়েছে, যেন নির্ধারিত ইজারা থেকে বেশি টোল (চাঁদা) আদায় না করে। এছাড়াও আমরা সেনাবাহিনী, নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ডদের বলে দিয়েছি, এসব জায়গায় অভিযান চালাতে, যেন অতিরিক্ত টোল আদায় না করে।
Comments