যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘পারস্পরিক শুল্ক’ বাতিলের আহ্বান চীনের

বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন-যুক্তরাষ্ট্রর মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আরোপিত শুল্ক পুরোপুরি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। রোববার (১৩ এপ্রিল) দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সিনহুয়া।
এক বিবৃতিতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, মার্কিন পক্ষের উচিত পারস্পরিক শুল্কের ভুল অনুশীলনকে সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সঠিক পথে ফিরে আসা।
এর আগে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় যে কিছু পণ্য যেমন- কম্পিউটার, স্মার্টফোন, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জাম এবং ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটগুলোকে পারস্পরিক শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে চীনের মন্ত্রণালয়টির একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই পদক্ষেপ সম্পর্কিত প্রভাব মূল্যায়ন করছে বেইজিং।
ওই মুখপাত্র বলেছেন, ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার মার্কিন পক্ষের একতরফা পারস্পরিক শুল্কের ভুল অনুশীলনকে সংশোধন করার জন্য একটি ছোট পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করেনি। নতুন শুক্লারোপ বৈশ্বিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, ব্যবসার স্বাভাবিক উৎপাদন ও কার্যক্রমকে ব্যাহত করেছে এবং জনগণের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করেছে।
চীন-মার্কিন সম্পর্কে চীনের অবস্থান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাণিজ্য যুদ্ধে কোন বিজয়ী নেই এবং সুরক্ষাবাদের জন্য কোন উপায় নেই বলেও জানান ওই মুখপাত্র।
এ ছাড়া তিনি চীন-মার্কিন পক্ষকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং অভ্যন্তরীণ পক্ষগুলোর যুক্তিবাদী কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করার এবং ভুল সংশোধনের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের 'ফেস দ্য নেশন' অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, 'এ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মধ্যে কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা নেই।' তাই ধারণা করা হচ্ছে, সহজেই এ বাণিজ্যযুদ্ধ থামবে না।
চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প প্রথমে চীনা পণ্যের ওপর ৫৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। পরে তা বাড়িয়ে বর্তমানে ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ, পরে ৮৪ শতাংশ এবং সর্বশেষ ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। সর্বশেষ এই শুল্ক কার্যকর হয়েছে শনিবার।
Comments