এফবিআই প্রধান হচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কাশ প্যাটেল
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা কাশ্যপ প্রমোদ 'কাশ' প্যাটেলকে (৪৪) এফবিআই প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিতে আগ্রহী। কাশ প্যাটেল নামেই তিনি বেশি পরিচিত।
আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। শনিবার দেওয়া এই ঘোষণার মাধ্যমে বর্তমান এফবিআই প্রধান ক্রিস্টোফার রেইকে বিদায় করার ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্যাটেল জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করেছিলেন।
তিনি এর আগে এফবিআইর ভূমিকা বদলানোর প্রস্তাব রেখেছেন এবং মত দিয়েছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমর্থন না জানালে যেকোনো কর্মীকে এই সংস্থা থেকে বহিষ্কার করা উচিত।
সেপ্টেম্বরে শন রায়ান শো শীর্ষক অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'এফবিআইর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে তারা শুধু গোয়েন্দাগিরিতে ব্যস্ত থাকে। আমি এই বিষয়টা পরিবর্তন করতে চাই। আমি এফবিআইর হুভার ভবনটি বন্ধ করে দেব এবং পরের দিন এটিকে যাদুঘর হিসেবে নতুন করে উদ্বোধন করব।'
'আমি ওই ভবনে কর্মরত সাত হাজার কর্মীকে বের করে এনে তাদেরকে পুরো যুক্তরাষ্ট্রে মোতায়েন করব, যাতে তারা অপরাধীদের পিছে ধাওয়া করতে পারেন। আপনারাও এক ধরনের পুলিশ। পুলিশের মতো আচরণ করুন। পুলিশের দায়িত্ব পালন করুন', যোগ করেন তিনি।
এফবিআইর বর্তমান পরিচালক রেই'র চাকরির মেয়াদ ২০২৭ পর্যন্ত বহাল থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে ট্রাম্প থাকে সরিয়ে দেবেন। এর আগে এমন হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্পই তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
এফবিআই প্রধানদের রাজনীতিমুক্ত রাখতে ১০ বছরের মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
প্যাটেলের মনোনয়ন চূড়ান্ত হতে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
এ বিষয়ে শনিবার এফবিআইর মুখপাত্র বলেন, 'প্রতিদিন এফবিআইর নারী-পুরুষরা আমেরিকানদের ক্রমবর্ধমান হুমকির হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কাজ করে। পরিচালক রেই এফবিআইর নারী-পুরুষ কর্মীদের দিকে নজর দেওয়া অব্যাহত রাখবেন। বিশেষত যাদেরকে নিয়ে আমরা কাজ করি এবং যাদের জন্য কাজ করি।'
২০১৭ সালে জেমস কমিকে বরখাস্ত করলে রেই এফবিআইর দায়িত্ব পান।
রেই'র আমলে এফবিআই আদালতের সম্মতিতে ট্রাম্পের প্রাসাদোপম বাসভবন মার-আ-লাগোয় তল্লাশি চালায়। উদ্দেশ্য ছিল সরকারি গোপনীয় নথি উদ্ধার করা। বিশ্লেষকদের মত, মূলত এ কারণেই ট্রাম্পের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প ক্ষমতায় এলেও রেই'র পদত্যাগের কোনো ইচ্ছে নেই বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
কাশ প্যাটেল এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী ও কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করেছেন।
২০২৩ সালে তিনি 'গভর্নমেন্ট গ্যাংস্টারস' নামে একটি অনুসন্ধানী বই প্রকাশ করেন। এই বইটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প।
প্যাটেলের মনোনয়নে সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে কিছুটা বিরোধিতা আসতে পারে। এমন কী, কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটরও আপত্তি জানাতে পারেন। তবে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতার কাছ থেকে সরাসরি সমর্থন পেয়েছেন তিনি, যাদের মধ্যে অন্যতম হলে টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটন।