করহার দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা এনবিআরের
- ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নির্দিষ্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য করহার দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা
- নির্মাতাদের জন্য বর্তমান ১০% করের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে
- নীতি পরিবর্তন ২০৩২ পর্যন্ত প্রতিশ্রুত করসুবিধার সাথে বিরোধপূর্ণ
- উচ্চ করহার পণ্যের দাম বাড়াবে
- ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে
৫০টিরও অধিক পণ্য ও পরিষেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং অন্যান্য কর বাড়ানোর পর এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার এবং কম্প্রেসার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিদ্যমান করের হার দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করেছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়ের উপর ১০ শতাংশ হারে কর দেয়। এছাড়া যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম আমদানিতে ২ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর (অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স) দিয়ে থাকে। এই করের হার ২০৩২ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকার কথা ছিল। তবে এনবিআরের সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, এই করের হার দ্বিগুণ হতে পারে এবং আর্থিক বছর ২০২৫-২৬ থেকেই তা কার্যকর হতে পারে। এই লক্ষ্যে, বর্তমানে বিদ্যমান আদেশটি বাতিল করে নতুন আদেশ চলতি সপ্তাহে জারি করা হতে পারে।
করের হার দ্বিগুণ করার বিষয়টি এমন সময়ে সামনে এসেছে যখন ইলেকট্রনিক্স পণ্যের উপর ভ্যাট হার গত দুই বছরে ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আসন্ন বাজেটে এটিকে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। আমদানির উপর যদি অগ্রিম আয়কর বাড়ানো হয়, তবে তা আদেশ জারি হওয়ার দিন থেকে কার্যকর হবে। এনবিআরের আয়কর বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন। গত শনিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর কর বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। যেখানে উল্লেখ ছিল, "ভ্যাটের পাশাপাশি করের নেট সম্প্রসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।"
বিশেষজ্ঞ ও শিল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কর বৃদ্ধি দেশের মোটরসাইকেল, ফ্রিজ এবং এয়ার কন্ডিশনার শিল্পের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে এবং শেষ পর্যন্ত এই চাপ ভোক্তাদের ওপরই এসে পড়বে।
২০৩২ সাল পর্যন্ত মঞ্জুর করা সুবিধা হঠাৎ করে বাতিল হওয়ায় এর প্রভাব পড়বে বিনিয়োগে। তা ছাড়া ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মনে সংশয়ের সৃষ্টি করবে।
ভ্যাট ও কর বাড়ানোর ফলে এসি ফ্রিজের দাম আরও বাড়বে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে একদিকে প্রকৃত আয় কমছে, অন্যদিকে ক্রমাগত কর বৃদ্ধি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
করহার দ্বিগুণ করার বিষয়টি এমন একটি সময়ে সামনে এসেছে যখন ইলেকট্রনিক্স পণ্যগুলো উপর ভ্যাট হার গত দুই বছরে ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আসন্ন বাজেটে এটিকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে উন্নীত করার জন্য আলোচনা চলছে।
২০১৯ সালে একটি আদেশের ভিত্তিতে মোটরসাইকেল,এসি, ফ্রিজ এবং কম্প্রেসার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের করহার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। পরে ২০২১ সালে একটি আদেশ দ্বারা এটিকে ১০ শতাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছিল। যা ২০৩২ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকার কথা। বর্তমানে কর্পোরেট করের হার ২৫ শতাংশ থেকে ২৭.৫ শতাংশ পর্যন্ত।
নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এনবিআরকে চলতি অর্থবছরে মূল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের শর্ত দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ভ্যাট ও কর বাড়াতে শুরু করে। এনবিআর সূত্রে আরও জানা গেছে, চার ধরনের পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করলে বছরে এক হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় হতে পারে।