বাধ্যতামূলক ছুটিতে ৬ ব্যাংকের এমডি
বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিরীক্ষার সুবিধার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোর স্ব স্ব পরিচালনা পর্ষদ জরুরি বৈঠক করে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।
তিনি জানান, ব্যাংকগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব ব্যাংকের এমডিরা যাতে নিরীক্ষায় কোনো ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপ করতে না পারেন, সেজন্য তাদেরকে সাময়িকভাবে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অনিয়ম না পেলে তারা ছুটি শেষে যোগদান করে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। আর কোনো অনিয়ম পেলে আইন অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী করা হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করে। সেখানে এসব ব্যাংকে অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে এস আলম ঘনিষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর শনিবার (৪ জানুয়ারি) জরুরি বোর্ড সভা ডেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায়। তাকে তিন মাসের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়াকে। এর একদিন পর রোববার আরো পাঁচ ব্যাংকের এমডিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
গত আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকসহ ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোতে আগে যোগদান করা এমডিরা দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু ব্যাংকগুলোর সম্পদ নিরীক্ষার সুবির্ধাথে এমডিদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। যাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা সংস্থাগুলো নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে। ব্যাংক সংস্কারের জন্য গঠিত ব্যাংকিং ট্রান্সফারের পরামর্শে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানা গেছে।