মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতায় দর সংশোধন
দুইদিন উত্থানের পরেই পুঁজিবাজারে আজ দর সংশোধন হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত দুইদিনে ১১৯ পয়েন্ট সূচকের উত্থান হলে প্রায় সব খাতের শেয়ারের দর বেড়ে যায়। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। আমাদের দেশের পুঁজিবাজারে বড় সমস্যা স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ। সামান্য লাভ হলেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা দেখা যায়। এতে করে পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ প্রবণতার কারণে পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা ফেরানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
আজ লেনদেনের শুরু থেকে শেয়ার বিক্রির পাশাপাশি কেনার প্রবণতা দেখা গেছে। যার কারণে সূচকের গতিতে অস্থিরতা ছিল। বেশ কয়েকবার উঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সূচক। লেনদেন শেষে প্রধান সূচক ও ডিএসইএস সূচক নেতিবাচক অবস্থানে চলে গেলেও ব্লু চিপ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক সামান্য ইতিবাচক ছিল।
ডিএসইএক্স সূচক ১৬ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট ও ডিএসইএস সূচক ৩ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট নিম্নমুখী হয়। লেনদেন হয় ৪০২ কোটি টাকার। দর বেড়েছে মাত্র ৭৯টি কোম্পানির, কমেছে ২৫৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬৬টির দর।
খাতভিত্তিক লেনদেনে প্রায় সব খাতই ছিল দরপতনে। ক্ষুদ্র খাতগুলো মধ্যে বেশ কয়েকটি যেমন সিমেন্ট, পাট, কাগজ ও প্রকাশনা খাত শতভাগ দরপতনে ছিল। প্রায় ৬৪ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। ২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা লেনদেন হয়ে শীর্ষে উঠে আসে টেলিযোগাযোগ খাতের রবি। শেয়ারটির দর বেড়েছে এক টাকা ২০ পয়সা। অ্যাকমি ল্যাবের ২০ কোটি ২৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ২০ পয়সা। রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ১৫ কোটি টাকা লেনদেন হলেও দরপতন হয় ৭০ পয়সা। এ কোম্পানি থেকে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা বেশি ছিল।
স্কয়ার ফার্মার প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দরপতন হয় ৬০ পয়সা। এছাড়াও লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় অবস্থান করে অগ্নি সিস্টেম, গ্রামীণ ফোন, ড্রাগন সোয়েটার, অরিয়ন ইনফিউশন ও বেক্সিমকো ফার্মা। ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশের তালিকার এক নম্বরে অবস্থান করে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং। এ তালিকার অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে পাওয়ার গ্রিড, রবি, আলহাজ টেক্স, দেশ গার্মেন্টস, ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্ক। দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে সাফকো স্পিনিং, খুলনা প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, ফ্যামিলি টেক্স, ইনডেক্স অ্যাগ্রো।
অপর শেয়ার বাজার চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক সাড়ে ১১ পয়েন্ট এবং সিএএসপিআই সূচক ১৮ পয়েন্ট নেতিবাচক অবস্থানে ছিল। দর বেড়েছে ৬৫টি কোম্পানির, কমে ৯২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির দর। লেনদেন হয় ১৫ কোটি টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয় ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। একদিনে ব্যবধানে লেনদেন ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা বাড়লেও সিএসইতে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেশি ছিল। এ্যাপেক্স ফুটয়্যার এবং ওয়াটা কেমিক্যালের ৪ কোটি করে টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। জিপিএইচ ইস্পাত ২ কোটি, রবি এক কোটি ও লাভেলোর ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
১০ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে হামি ইন্ডাস্ট্রিজ। এরপরে কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ, সালভো কেমিক্যাল, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ উঠে আসে। পতনের শীর্ষে ছিল প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, সায়হাম টেক্স, খান ব্রাদার্স পিপি, অ্যাপেক্স ফুড, ই ক্যাবলস।