হার দিয়ে ক্যারিয়ার শেষ হলো নাদালের
একের পর এক ইনজুরিতে নাকাল হয়ে থামার ঘোষণাটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। জানিয়েছিলেন স্পেনের হয়ে ডেভিস কাপে খেলেই টেনিসকে বিদায় জানাবেন। কিন্তু ডেভিস কাপে যে এতো দ্রুত থামতে হবে রাফায়েল নাদালকে তা কেউ হয়তো ভাবেননি। টেনিসের মহাতারকা রাফায়েল নাদালের শেষ ম্যাচটা দেখে ফেলল বিশ্ব। শেষ ম্যাচটায় হেরে গেছেন নাদাল। সেই সঙ্গে স্পেনও ডেভিস কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছে।
ডেভিস কাপের সিঙ্গেলসে প্রথম ম্যাচে নাদাল হেরেছেন নেদারল্যান্ডসের বটিচ ফন ডি জান্ডশুল্পের কাছে। তবে স্পেনের নতুন তারকা কার্লোস আলকারাজ আরেক সিঙ্গেলসে জয় পাওয়ায় নাদালের আরও একটি ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা ছিল।
কিন্তু সেই সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে ফল নির্ধারণী ডাবলসে আলকারাজ ও মারসেল গ্রানোয়ার্সের জুটি হেরে যাওয়ায়। নেদারল্যান্ডসের বটিচ ফন ডি জান্ডশুল্প ও ওয়েসলি কুলহফ জুটির কাছে হারে স্পেনের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। নিশ্চিত হয় নাদালের বিদায়ও।
গতকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মালাগায় নাদাল ফন ডি জান্ডশুল্পের কাছে হারেন ৬-৪, ৬-৪ গেমে। শুরুতেই পিছিয়ে পড়ার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি এই ৩৮ বছর বয়সী। অন্যদিকে আরেক সিঙ্গেলসে আলকারাজ ডাচ ট্যালন গ্রিকসপুরকে হারান ৭-৬(৭/০), ৬-৩ গেমে। এরপর ডাবলসে আলকারাজ-গ্রানোয়ার্স জুটি ৭-৬ (৭/৪), ৭-৬ (৭/৩) গেমে হেরে যান।
নাদাল অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন গত অক্টোবরে। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা এই কিংবদন্তি জানিয়েছিলেন, স্পেনের হয়ে ডেভিস কাপ খেলেই টেনিস কোর্ট থেকে বিদায় নেবেন।
তবে নাদাল টেনিসে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন আরও আগেই। মাঝে অনেকদিন চোটের সঙ্গে লড়াই করে গত জানুয়ারিতে লম্বা সময় পর কোর্টে ফেরেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ফের উরুর চোটে ছিটকে যান। ইউরোপিয়ান ক্লে কোর্টে চলতি বছর নাদাল মাত্র চারটি টুর্নামেন্ট খেলেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় টুর্নামেন্ট ফ্রেঞ্চ ওপেন থেকে ছিটকে যান প্রথম রাউন্ড থেকেই। এরপর আর মাত্র দুটি টুর্নামেন্টই খেলেছেন নাদাল। রোঁলা গারোতে বাস্তাদ ও অলিম্পিক গেমস।
দীর্ঘ ২৩ বছরের ক্যারিয়ারে নাদাল ২২টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন। এর মধ্যে ফ্রেঞ্চ ওপেনই জিতেছেন ১৪বার। আর সব মিলিয়ে নাদালের ক্যারিয়ারে শিরোপার সংখ্যা ৯২টি।
টেনিসের সর্বকালের সেরার তালিকায় নাম লেখানো নাদালকে বিদায়ের রাতে ছুঁয়েছে আবেগ। অশ্রু চোখে বিদায় নিয়েছেন, সমর্থকদের প্রতি জানিয়েছেন কৃতজ্ঞতা, '২০ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ার আমার। এই ভালো-খারাপ সময়ে আপনারা আমার পাশে ছিলেন, খেলা চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।'
টেনিসের প্রতি ভালোবাসা যে এখনও কমেনি সেটিও জানিয়েছেন, 'সত্য হচ্ছে আপনি কখনোই এই মুহূর্তে থাকতে চাইবেন না। আমি টেনিস খেলতে খেলতে ক্লান্ত নয়, আমার শরীর চায় না আমি খেলাটা চালিয়ে যাই এবং আপনাকে সেটা মেনে নিতে হবে।'