চেয়ারম্যানের মেয়াদ বাড়াচ্ছে আইসিসি
বদলে যাচ্ছে আইসিসি চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ। দুই বছরের জায়গায় টানা তিন বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন চেয়ারম্যানরা। এমন প্রস্তাব করা হয়েছে আইসিসি সভায়। অপেক্ষা এখন অনুমোদনের। অভিযোগ উঠেছে, আইসিসির ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান বিসিসিআই সচিব জয় শাহ'কে বাড়তি সুবিধা দেয়ার জন্যই এমন নিয়ম করতে যাচ্ছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু ক্রিকেট দুনিয়ায় এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে অভিযোগের কোন শেষ নেই। বেশিরভাগ সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের মতে, আইসিসি যতটা না ক্রিকেটের কথা ভাবে তার চেয়েও বেশি চিন্তা করে অর্থের কথা। অর্থের জোগান দিতে পারবে যারা, তাদের কথাতেই উঠে বসে আইসিসি।
আর সে কারণেই সংস্থাটিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তিন দেশ ভারত-অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের। অনেকের চোখে ক্রিকেটের তিন মোড়ল। কিন্তু এই মোড়লদের মধ্যেও ভারতের জায়গাটা একটু স্পেশাল। মূলত আইসিসির বাৎসরিক আয়ের সিংহভাগ আসে ভারতীয় বাজার থেকে, তাই এখানে ছড়িও ঘোরায় তারাই। অনেকটা যেন, বিসিসিআই এর হাতের পুতুল আইসিসি। যে কারণে অনেকেই আইসিসিকে ডাকে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল নামেও।
মাত্র শেষ হওয়া আইসিসি সভায় উঠেছে এক আজব প্রস্তাব। কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে আইসিসি চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ বাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে তারা। নারী বিশ্বকাপের ফাইনাল উপলক্ষে আইসিসির এবারের সভা অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো দুবাই এর হেডকোয়ার্টারে। যেখানে চেয়ারম্যান এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালকের পদের মেয়াদ বাড়ানো সুপারিশ করা হয়। যাতে দু বছরের মেয়াদ বাড়িয়ে তিন বছরের প্রস্তাব করে আইসিসি। তবে, প্রস্তাব করা হলেও এখনই সেটা চালু হয়ে যাবে, তা নয়। আপাতত সদস্য দেশগুলোর কাছে পাঠানো হবে এ প্রস্তাব। তাদের অনুমোদন পেলেই কেবল আইনে পরিণত হবে এটি। তবে, মেয়াদ বাড়ানো হলেও কমানো হচ্ছে টার্মের সংখ্যা।
আইসিসির বর্তমান আইন অনুযায়ী, আইসিসির চেয়ারম্যান দুই বছর মেয়াদে প্রথম দায়িত্ব পান। পরে তিনি আরো দুইবার দুই বছর করে চাইলে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। অর্থাৎ, মোট ৬ বছর করে দায়িত্ব পালনের সুযোগ আছে একজনের জন্য। তবে, সুপারিশকৃত নতুন আইনে মোট ৬ বছর ঠিক রাখলেও, তিন টার্মের জায়গায় তিন বছর করে দুই টার্ম এর প্রস্তাব করেছে আইসিসি কমিটি। একই প্রস্তাব করা হয়েছে স্বাধীন পরিচালক পদের জন্যও।
নতুন আইনটি অনুমোদনের জন্য সবার কাছে পাঠানো শুরু হলেও, কোন প্রেক্ষাপটে এই পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ল তা জানায়নি ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আগামী ডিসেম্বর মাসে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সচিব এবং ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ'র ছেলে জয় শাহ এর আইসিসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার কথা রয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, তাকে বাড়তি সুবিধা দিতেই এই আয়োজন করছে আইসিসি এবং বিসিসিআই। যদিও ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, আইসিসি পরিচালনার কাজ আরো সহজ এবং স্থিতাবস্থা আনতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।
সুযোগ থাকা স্বত্বেও গ্রেগ বার্কলে টানা তৃতীয়বারের মতো আইসিসির চেয়ারম্যান পদে আসীন না হওয়ায় এবার নতুন চেয়ারম্যান হবেন জয় শাহ।