হাজার মাইল দূরত্ব পেরিয়েও মালদ্বীপে একাত্তরের গৌরবময় বিজয়ের ৫৪তম বর্ষ উদযাপন
মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাই কমিশনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে। দিনব্যাপী কর্মসূচির মাধ্যমে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত চূড়ান্ত বিজয়ের ৫৪তম বার্ষিকী স্মরণ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে হুলেমালেতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন ভবন বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজানো হয়।
সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে মালদ্বীপের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলরুমে মূল আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার রাষ্ট্রদূত ড. মো. নাজমুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সাংবাদিক মোঃ আলামিন। পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত সহকারী হাবিবুর রহমান, কল্যাণ সহকারী আল মামুন পাঠান এবং হিসাবরক্ষক শিরিন ফারজানা।
স্বাগত বক্তব্য দেন শ্রম কাউন্সিলর সোহেল পারভেজ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে হাই কমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বাঙালি জাতির ত্যাগ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতা, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং বিজয় অর্জনের কঠিন বাস্তবতার কথা গভীর আবেগের সঙ্গে স্মরণ করেন। একই সঙ্গে তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন, প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মালদ্বীপ বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিজয় দিবস কেবল একটি ঐতিহাসিক দিন নয়, এটি আমাদের জাতীয় ঐক্য ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। এছাড়া বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফোরাম মালদ্বীপে সেক্রেটারি সাজ্জাদ হোসেন, প্রবাসী অধিকার পরিষদের সভাপতি আলমগীর হোসেন সহ অন্যান্যরা। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আলোচনা সভা শেষে দেশাত্মবোধক গান ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ আকর্ষণ ছিল র্যাফেল ড্র, যেখানে প্রথম পুরস্কার হিসেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের স্পন্সরে ঢাকা–মালে–ঢাকা একটি বিমান টিকিট বিজয়ীর হাতে তুলে দেন রাষ্ট্রদূত।
পুরো আয়োজনজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে মহান বিজয় দিবসের আনন্দ, গৌরব ও দেশপ্রেমের আবহ স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
Comments