প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে ব্যাহত মূল্যায়ন পরীক্ষা; ক্ষোভ অভিভাবকদের
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে মূল্যায়ন পরীক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ।
২ ডিসেম্বর সোমবার উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকরা কোনো পরীক্ষার দায়িত্বে অংশগ্রহণ করছেন না। বেশিরভাগ স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরিরা একাই পরীক্ষা পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে পরীক্ষার শৃঙ্খলা ও মান দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবক ফাতেমা, রহিমা খাতুন, জোছনা বেগমসহ আরও অনেকে বলেন, "এভাবে যদি স্কুল চলে, আমাদের সন্তানরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত করতে আমরা সন্তানদের সরকারি স্কুলে পাঠাই। কিন্তু শিক্ষকরা যদি ক্লাস ও পরীক্ষার কাজে অংশ না নেন, তাহলে বাধ্য হয়ে হয়তো আমাদের বাচ্চাদেরকে কিন্ডারগার্টেন বা মাদরাসায় ভর্তি করাতে হবে।"
একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিটন সরকার বলেন, "সহকারী শিক্ষকদের দাবিগুলো অনেকটাই যৌক্তিক। তবে তারা কাজে না এলেও আমি দপ্তরিকে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে নিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি যেন না হয়, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।"
হাইমচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শেখ আবু জাফরকে মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "সহকারী শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি আমরা পরে জানাবো।"
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান জানান, "সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে মূল্যায়ন পরীক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই আমি স্ব-উদ্যোগে বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করে প্রধান শিক্ষকদের পরীক্ষা সম্পন্নের অনুরোধ জানাই। অধিকাংশ বিদ্যালয়েই ইতোমধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।"
হাইমচর উপজেলায় বর্তমানে ৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪১৩ জন সহকারী শিক্ষক এবং ২৯ জন প্রধান শিক্ষক নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকদের এই কর্মবিরতি পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
Comments