অর্থায়ন না থাকলে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ব্যয়বহুল মেগা প্রকল্পের পেছনে না ছুটে মানুষকে অগ্রাধিকার দিতে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, বাইরের অর্থায়ন না থাকলেও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে নীতি নিতে হবে।
মঙ্গলবার রাতে ইসলামাবাদের সেন্টোরাসের মোভেনপিক হোটেলে আয়োজিত ২৮তম সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্সের অতিথি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, মানুষ যদি জলবায়ু বিপর্যয়ে ভোগে এবং নিরাপদ পানি না পায়, তবে উন্নয়নের কোনো অর্থ থাকে না।" তিনি মনে করেন, প্রকৃত স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তুলতে হবে নিচ থেকে—সহযোগিতা, আচরণগত পরিবর্তন ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, তীব্র রাজনৈতিক বিভাজন ও সংকীর্ণ স্বার্থ জাতীয় ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকারকে দুর্বল করছে। শ্রীলঙ্কা থেকে নেপাল পর্যন্ত সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এই অস্থিরতা একদিকে চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে শাসনব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা ও তরুণ নেতৃত্বকে এগিয়ে আনার সুযোগও হতে পারে।
বিশ্বজুড়ে তরুণদের জলবায়ু আন্দোলনের প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আজকের যুবসমাজ শুধু জলবায়ু ন্যায়বিচারই নয়, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মর্যাদাও দাবি করছে। তিনি সতর্ক করেন, যদি এখনই কাঠামোগত সংস্কার না আনা হয়, ভবিষ্যতের পৃথিবী খাদ্য ও পানির সংকট, চরম আবহাওয়া এবং বাস্তুচ্যুতি—সব মিলিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠবে।
এসডিজি ও জলবায়ু অর্থায়নের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একটি সুন্দর এসডিজি মেন্যু দেওয়া হয়েছে, কিন্তু অর্ডার দেওয়ার মতো সম্পদ দেওয়া হয়নি। তিনি 'লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড'-এর অকার্যকারিতা এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ন্যায়বিচারের বদলে ঋণ দেওয়ার প্রবণতার সমালোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ২৩টি দেশের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি। বক্তব্য দেন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের (এসডিপিআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আবিদ কিউ. সুলেরি এবং পাথ-এর এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ অঞ্চলের প্রধান নাবিল গোহীর।
Comments