ফরিদপুরে ৫ লাখ ২৮ হাজার শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদান, মাসব্যাপী ক্যাম্পেইন শুরু

সারাদেশের ন্যায় ফরিদপুর জেলাতেও মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ শুরু হয়েছে। রবিবার (১২ অক্টোবর, ২০২৫) সকালে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান মোল্লা।
আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি। এর মাধ্যমে ফরিদপুর জেলার ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৮৮ জন শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান মোল্লা সরকারের এই উদ্যোগকে 'সময়োপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ' বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, "সরকার যে টিকা দিচ্ছে তা নিরাপদ। শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই টিকাদান কর্মসূচি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে ফরিদপুরে একটি শিশুও টিকার আওতার বাইরে না থাকে।"
তিনি আরও বলেন, "এবারের টিকাদান ক্যাম্পেইনের দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত, টাইফয়েড থেকে পরিত্রাণ এবং দ্বিতীয়ত, সকল শিশুর জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করা। আমরা অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা সচেতনতা বৃদ্ধি করুন এবং শিশুদের টিকা কেন্দ্রে নিয়ে আসুন।"
অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, "টাইফয়েড জ্বর বাংলাদেশে একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এর প্রাদুর্ভাব ও জটিলতা বেশি। এই রোগ প্রতিরোধে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ। এটি এক ডোজের ইনজেকটেবল টিকা, যা শিশুকে দীর্ঘদিনের জন্য সুরক্ষা দেবে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এই কর্মসূচি সফল করতে সব ধরনের সরঞ্জাম ও জনবল প্রস্তুত রেখেছে।"
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সুষ্মিতা সাহা এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আজমির হোসেন।
উদ্বোধনের পরপরই জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা টিকা গ্রহণ করে। টিকা নেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নিলুফা ইয়াসমিন বলে, "আগে টাইফয়েড জ্বর হলে অনেক কষ্ট পেতে হতো শুনেছি। এখন টিকা নিয়ে খুব ভালো লাগছে। টিকা নেওয়ার সময় একটুও ব্যথা লাগেনি। আমরা সুস্থ থাকলে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারব।"
একই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম জানায়, "স্কুলে সবাই টিকা নিচ্ছে। স্যার-ম্যাডামরা বলেছেন এই টিকা আমাদের রোগ থেকে বাঁচাবে। তাই ভয় না পেয়ে টিকা নিলাম। আমি আমার বন্ধুদেরও বলব, তোমরাও এসে টিকা নাও।"
Comments