সুনামগঞ্জে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত

'একদিন তুমি পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গড়বো, সযত্নে তোমায় রাখবো আগলে'- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সুনামগঞ্জে বর্ণাট্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৩৫তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং প্রবীণ হিতৈষী সংঘের যৌথ আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে শুরুতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য র্যালী করা হয়েছে। র্যালী শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সুচিত্রা রায়।
আলোচনা সভায় প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তাপস রঞ্জন ঘোষ।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সভাপতি ডা. সৈয়দ মনোয়ার আলী, প্রফেসর ন্যাথানায়েল এডউইন ফেয়ারক্রস, আতাউর রহমান পীর, নুরুর রব চৌধুরী, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, শাহাবুদ্দীন প্রমুখ। আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র আল-কুরআন থেকে তেলওয়াত করেন আব্দুর রউফ তালুকদার। গীতা পাঠ করেন অনুরুল চন্দ্র।
বক্তারা বলেন, প্রবীণেরা পরিবার ও সমাজে অবহেলিত, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই মানুষগুলো নানাভাবে অবহেলার শিকার হন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। মা-বাবা যেমন শত প্রতিকূলতার মুখেও তাঁর সন্তানকে কখনো ভাগ করেন না, ঠিক তেমনি বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মাকেও ভাগ করা যাবে না। প্রবীণদের প্রতি অবহেলা করা যাবে না।
বক্তারা আরও বলেন, প্রবীণ জনগোষ্ঠী হলো অভিজ্ঞতার ভান্ডার। তাঁদের জীবনে সঞ্চিত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সুচিন্তিত পরামর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। নবীনদের উচিত এই প্রবীণদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ কাজে লাগিয়ে জীবন ও সমাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, 'প্রবীণ জনগোষ্ঠীকে পরিবার ও সমাজে তাঁদের যথাযথ স্থান ও মর্যাদা দিতে হবে। তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং তাঁদের সেবা-যত্ন করা শুধু নৈতিক দায়িত্বই নয়, এটি সমাজ ও পরিবারের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রবীণ যারা আছেন তাঁরা যেন বসে গল্পগুজব করতে পারেন সেই জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি 'প্রবীণ নিবাস' করে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে চাই। সেখানে বসে তাঁরা কথাবার্তা বলবেন, আড্ডা দিবেন, একজন আরেকজনের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবেন। তাঁরা একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করবেন। মূলত এই উদ্দেশ্যেই প্রবীণ নিবাস করার উদ্যোগ নিতে চাই। আমরা যতদ্রুত সম্ভব এটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। সেজন্য সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশী।'
Comments