ঘরের মাঠে বিধ্বস্ত হলো রিয়াল মাদ্রিদ

মাদ্রিদ ডার্বিতে অ্যাতলেটিকোর কাছে স্রেফ উড়ে গেলো রিয়াল। ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ম্যাচের শুরুতেই গোল হজম করে বসে লস ব্লাঙ্কোসরা। পিছিয়ে পড়েও ১১ মিনিটের ব্যবধানে ২ গোল দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় রিয়াল। তবে এরপরই যেন খেই হারায় শাভি আলোনসোর দল। শেষ পর্যন্ত অ্যাতলেটিকোর কাছে ৫-২ গোলের বড় ব্যবধানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাচের ১৪ মিনিটেই নুরমান্দের গোলে লিড নেয় অ্যাতলেটিকো। এরপর ২৫ ও ৩৬ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আর্দা গিলারের গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। প্রথমার্ধের শেষ দিকে সমতা টানেন আলেকসান্দার সরলথ। দ্বিতীয়ার্ধে একের পর আক্রমণে রিয়ালকে কোনঠাসা করে রাখে অ্যাতলেটিকো। জোড়া গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ। আর রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন অঁতোয়ান গ্রিজমান।
পুরো ম্যাচে বল পজিশনে কিছুটা এগিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে আক্রমণে তেমন সুবিধা করতে পারেনি তারা। ৬টি শট নিয়ে ওই গোলের দুটিই ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে ১৩ শটের ৭টি লক্ষ্যে রাখতে পারে অ্যাতলেটিকো।
৭ ম্যাচে ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত অবশ্য শীর্ষেই থাকছে শাবি আলোন্সোর দল। এক ম্যাচ কম খেলে ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে বার্সেলোনা। ৭ ম্যাচে ৩টি করে জয় ও ড্রয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠেছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ।
লা লিগায় সবশেষ পাঁচ ডার্বিতে অপরাজিত অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সরলথ। গোলকিপারকে একা পেলেও পেছন থেকে দারুণ ট্যাকলে বল ছিনিয়ে নেন এদের মিলিতাও। তবে ১৪তম মিনিটে নুরমান্দের গোলে এগিয়ে যায় অ্যাতলেটিকো। গিলিয়ানো সিমেওনের ক্রসে হেডে গোলটি করেন ডিফেন্ডার নুর।
২৫তম মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শটেই এগিয়ে যায় রিয়াল। সতীর্থের থ্রু পাস ডি-বক্সে ধরেই কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান কিলিয়ান এমবাপ্পে। লিগে এই নিয়ে টানা তিন ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার ম্যাচে জালের দেখা পেলেন এমবাপ্পে। এবারের লা লিগায় এখন পর্যন্ত তার গোল হলো ৮টি, সব মিলিয়ে ১০টি।
৩৬তম মিনিটে লিড নেয় রিয়াল। বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে বাইলাইনের কাছ থেকে কাটব্যাক করেন ভিনিসিয়ুস, পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন গিলার। এ নিয়ে এবারের আসরে তার গোল হলো ৩টি।
তিন দিন আগে রায়ো ভায়োকানোর বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী তারকা হুলিয়ান আলভারেজ। রিয়ালের বিপক্ষে ৩৯তম মিনিটে গোল পেতে পারতেন তিনি। তবে দূর থেকে তার নেওয়া শট পোস্টে বাধা পায়। ৪৩তম মিনিটে জালে বল পাঠান ক্লেমোঁ লংলে; তবে ভিএআর মনিটরে দেখে হ্যান্ডবল দেন রেফারি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে কোকের ক্রসে নিখুঁত হেডে সমতা টানেন সরলথ। ২-২ গোলের সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে অ্যাতলেটিকো। ৪৯তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে আসা ক্রস ঠেকাতে গিয়ে অনেক উঁচুতে পা তুলে নিকো গনসালেসের মুখে আঘাত করেন গিলার, সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিক থেকে ফের এগিয়ে যায় অ্যাতলেটিকো।
৬২তম মিনিটে সরলথের শট এগিয়ে এসে আটকে দেন কোর্তোয়া। তবে পরের মিনিটেই অসাধারণ এক গোলে ব্যবধান বাড়ান আলভারেজ। ডি-বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে দুর্দান্ত ফ্রি কিকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
৮৩তম মিনিটে গনসালেসেরে বদলি নেমে রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন ফরাসি তারকা গ্রিজম্যান। আলেক্স বায়েনার পাস ডি-বক্সে পেয়ে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান এই ফরোয়ার্ড। লিগে এই নিয়ে টানা ছয়টি মাদ্রিদ ডার্বিতে অপরাজিত রইল তারা অ্যাতলেটিকো।
Comments