শৈলকুপায় ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কিসমত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। পরে বিকাল ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরআগে দুপুরে প্রধান শিক্ষকের কিছু বহিরাগত সমর্থক ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে স্থানীয় অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়ালে তারা পালিয়ে যায়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, গত সোমবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে নিজ রুমে ডেকে নেয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন ওই শিক্ষক। বিয়ষটি ঘটনার দিনই স্কুলের শিক্ষকদের জানালে তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এরই জের ধরে বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে ক্লাস বন্ধ দিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। এক পর্যায়ে পালিয়ে যায় প্রধান শিক্ষক। কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষকের কিছু বহিরাগত সমর্থক ছাত্রদের উপর হামলা করে। এতে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়। হামলার পর অভিভাবকরা এসে ছাত্রদের পাশে দাড়ালে পালিয়ে যায় বহিরাগতরা। এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপরও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। পরে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস, থানার ওসি মাসুম খান ঘটনাস্থলে যান। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ^াসে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ স্থগিত করে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ছাত্রী বলেন, 'আমি ওই দিন হেড সারের রুমে ছিলাম। আমি জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি আমার বান্ধবীর শরীরের হাত দিচ্ছে এবং ওড়না ধরে টান মারে। ওইদিনই আমরা স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা বন্যা মেডামকে জানায়।'
এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষিকা বন্যা বলেন, 'আমাকে মেয়েরা বিষয়টি বলেছিলো। আমি ওদের পরামর্শ দিয়েছিলাম অভিভাবকদের ডেকে এনে লিখিত অভিযোগ দিতে।'
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিগ্ধা দাস বলেন, 'ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। শিক্ষার্থীরা সবাই যার যার বাড়িতে ফিরে গেছে। অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করবো। শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।'
এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান বলেন, ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
Comments