সুরক্ষার অভাব পর্যটকবাহী হাউজবোটে, পর্যটকদের উদ্বেগ

সুনামগঞ্জের মনোরম টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য তৈরি হাউসবোট ও স্থানীয় নৌকাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি, একটি হাউসবোট থেকে পড়ে পাঁচ বছর বয়সী শিশু মাসুম মিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু এই উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। এতে করে হাওরে চলাচলকারী নৌযানগুলোর সুরক্ষার ঘাটতি আবারও সামনে এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক হাউসবোট এবং দুই শতাধিক স্থানীয় নৌকা চলাচল করে। এসব হাউসবোট মূলত বিলাসবহুল ভ্রমণের জন্য তৈরি করা হলেও, সেগুলোতে নিরাপত্তার ন্যূনতম ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে না। নিয়ম অনুযায়ী, লাইফ জ্যাকেট, বয়া, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) এবং প্রাথমিক চিকিৎসার কিট থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ হাউসবোট ও স্থানীয় নৌকায় এগুলোর উপস্থিতি নেই। এমনকি, জরুরি পরিস্থিতিতে যাত্রীদের নিরাপদ রাখার জন্য প্রশিক্ষিত কোনো কর্মীও নেই। অনেক ক্ষেত্রে, কেবল নামমাত্র কিছু লাইফ জ্যাকেট রাখা হয়, যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। আবার, অধিকাংশ হাউসবোটে ছাদে বা জানালার পাশে কোনো ধরনের সুরক্ষা রেলিং (Rolling) নেই, যা হাওরে আসা শিশুদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা এই হাউসবোটগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে হাওরের বিশাল এলাকা এবং অসংখ্য নৌযানের কারণে এই কাজটি চ্যালেঞ্জিং। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে যে, হাউসবোটের জন্য নির্দিষ্ট কিছু কঠোর নিরাপত্তা বিধি প্রণয়নের কাজ চলছে, যা ভবিষ্যতে নৌযানের সুরক্ষার মান নিশ্চিত করবে।
নেত্রকোনা থেকে আসা পর্যটক লিটন আহমেদ বলেন, নিরাপত্তার তেমন কোনো কিছু চোখে পড়ে না৷ সাধারণত লাইফ জ্যাকেট ছাড়া কিছুই থাকে না। হাউসবোটের জানালায় কোনো ধরনের সুরক্ষা রেলিং। শিশুদের নিয়ে হাওরে আসলে নিরাপত্তা ঘাটতি থাকে। আমরা চাই, হাওরের সবগুলো নৌকা ও হাউসবোটে নিরাপত্তার সকল কিছু রাখা হউক।
ঢাকার গাজীপুর থেকে আসা পর্যটক নাজমুল হাসান বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করা জরুরি। এতে করে যেসকল পর্যটক হাওরে ঘুরাঘুরি করতে আসেন নির্বিঘ্নে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেন।
হাউস বোট ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, হাউসবোট গুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে লাইফ জ্যাকেট, বয়া, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা হয়েছে। অনেকগুলোতে হয়তো কিছু কমবেশি হতে পারে। তবে, আমরা নিরাপত্তার বিষয়ে সবসময়ই সচেতন থাকি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান মানিক বলেন, আমরা এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
Comments