চিরকুটে অভাবের কথা লিখে স্ত্রী-দুই সন্তানকে হত্যার পর যুবকের আত্মহত্যা

চিরকুটে অভাবের কথা লিখে স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে হত্যার পর এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। রাজশাহীর পবা উপজেলার বামুনশিকড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ওই এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ পাওয়া গেছে।
নিহতরা হলেন- মিনারুল (৩৫), মনিরা (২৮), দেড় বছরের মিথিলা ও মাহিম (১৩) ।
স্থানীয়রা জানান, দুই সন্তান ও স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। ঋণগ্রস্ত হয়ে অভাব অনটন ও খাবার সংকটে তারা এ পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে চিরকুট লিখে গেছেন। মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, চারজনের লাশ উদ্ধারের খরব পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।
চিরকুটে লেখা আছে, আমি মিনারুল নিচের যে সব লেখা লেখবো। সব আমার নিজের কথা লিখে যাচ্ছি। কারণ, আমরা চারজন আজ রাতে মারা যাবো। এই মৃত্যুর জন্য কারো কোনো দোষ নেই।
এতে লেখা আছে, আমি মিনারুল প্রথমে আমার স্ত্রীকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিমকে (ছেলে) মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে (মেয়ে) মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।
চিরকুটে লেখা আছে, আমাদের চারজনের মরা মুখ যেন বাপের বড় ছেলে ও তার স্ত্রী-সন্তান না দেখে এবং বাপের বড় ছেলে যেন জানাজায় না আসে। আমাদের চার জনকে কাফন দিয়ে ঢাকতে আমার বাবা যেন টাকা না দেয়। এটা আমার কসম।
চিরকুটের আরেক পাতায় লেখা আছে, আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম, কারণ আমি একা যদি মরে যাই তাহলে, আমার স্ত্রী-সন্তানরা কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভাল হলো। কারও কাছে কিছু চাইতে হবে না। আমার জন্যে কাউকে মানুষের কাছে ছোট হতে হবে না। আমার বাবা আমার জন্য অনেক মানুষের কাছে ছোট হয়েছে, আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
Comments