গণ-অভ্যুত্থানে হামলা: জাবির ৬৪ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার, সনদ বাতিল ৭৩ জনের

গত বছরের ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকায় ৬৪ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন। বহিস্কৃতরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে ঘটনার মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে ৪৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং ৭৩ জন সাবেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাসনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় সিন্ডিকেট সভা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। গণ-অভ্যুত্থানের সময় হামলা সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট।
উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, হামলাকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২৯ জন। এদের মধ্যে ৯৯ জন জাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ১৩০ জন বর্তমান শিক্ষার্থী। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ৬৪ জনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আর ৩৭ শিক্ষার্থীকে ২ বছরের জন্য, ৮ জনকে ১ বছরের জন্য এবং ১ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় সাবেক ৯৯ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৩ জনের শিক্ষা সনদ বাতিল ও অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ৬ জনের সনদ ২ বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে হওয়া গণঅভ্যুত্থানে জাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলায় যোগ দেয়া বহিরাগত সন্ত্রাসী ও পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনের বহির্ভূত হওয়ায় তাদের বিচারের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে (আইসিটি) পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
এদিকে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ৪০ শিক্ষার্থীকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২০ জন বর্তমান শিক্ষার্থী এবং বাকি ২০ জন সাবেক শিক্ষার্থী। তাদের অব্যহতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি জবাব দিলে তা যথাযথ হবে।
এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব জানিয়েছেন, হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় অব্যহতি দেয়া হয়েছে তাদের। প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনো সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি এবং ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেও তাদের জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Comments