তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সবুজ হত্যার কয়েক ঘন্টার মধ্যে প্রধান আসামি সহ গ্রেফতার ২

কুয়াকাটায় সবুজ হাওলাদার (২৩) নামের এক যুবকে নিখোঁজের দুই দিন পরে পরিত্যক্ত বাড়ীর ঝোপের মধ্যে থেকে গলায় গামছা লাগানো অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করেছে মহিপুর থানা পুলিশ। নিহত সবুজ কুয়াকাটা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের আবুল বাসার হাওলাদার এর ছেলে। নিহতের স্ত্রী আমেনা বেগমের তথ্য মতে, তদন্তকারী কর্মকর্তা সহ মহিপুর থানা পুলিশ গোয়েন্দা টিম ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অত্র মামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আসামী মোঃ লাল চাঁন (২৪), পিতা- আঃ বারেক হাওলাদার, সাং-শরীফপুর এবং ০১নং ওয়ার্ড, কুয়াকাটা পৌরসভার নিজ বসত বাড়ি হতে শনিবার ভোর ০৪:৩৫ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে কলাপাড়া সার্কেলের এডিশনাল এসপি সমীর সরকার প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি আরো বলেন, ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদকালে উক্ত আসামী জানায় একই এলাকার নিজাম হাওলাদার এর ছেলে মো: বেল্লাল সহ তাহারা দুইজনে একত্রে ১৬ জুলাই দিবাগত রাত ০১টা ১৫ মিঃ ভিকটিম সবুজ হাওলাদারকে তার ব্যবহৃত গামছা দ্বারা গলায় ফাঁস লাইগাইয়া হত্যা করেন এবং লাশ গোপন করার উদ্দেশ্যে জঙ্গলের মধ্যে লতাপাতা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখে। লাল চাঁন এর স্বীকারোক্তিমতে অপর আসামী মো: বেল্লাল (২০) কে তাহার বসত বাড়ি হইতে সকাল ০৬ টা ৩০ মিঃ গ্রেফতার করা হয়। আসামী লাল চাঁন এর শয়ন কক্ষ হইতে রক্ষিত স্কুল ব্যাগের মধ্য থেকে ভিকটিম সবুজ হাওলাদার এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে।
আসামীরা মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করে জানায় যে, ভিকটিম সবুজ সহ আসামী লাল চাঁন ও বেল্লাল তাহারা পরপষ্পর আত্মীয়-স্বজন। তাহারা প্রায় সময়ই রাত বিরাতে মোবাইলে গেমস খেলে ও আড্ডা দেয়। একই সাথে চলাফেরা করার কারণে আসামী বেল্লাল এর সাথে ভিকটিম সবুজের পূর্ব থেকে টাকা পয়সার লেনদেন নিয়া বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন ১৬ জুলাই রাত অনুমান ৮ টা ৪৫ মিঃ আসামী লাল চাঁন ও ভিকটিম সবুজ হাওলাদার ঘটনাস্থলের সামনের পাকা রাস্তার উপর বসে আড্ডা দেয়। একপর্যায়ে ভিকটিম সবুজ তার ব্যবহৃত মোবাইলে টাকা না থাকায় আসামী লাল চাঁন এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে তার স্ত্রীর সাথে কথা বলে এবং কথা বলার পরে ভিকটিম সবুজ তার মোবাইল ফোন দিয়ে আসামী লাল চাঁন এর শরীরের বিভিন্ন অংশের ভিডিও করে। উক্ত ভিডিও ভিকটিম সবুজ হাওলাদার ফেসবুকে ছড়িয়ে দিবে বললে উক্ত বিষয় নিয়া উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। তখনই পাকা রাস্তার উপর অপর আসামী মো: বেল্লাল এসে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে আসামী বেল্লাল ও লাল চাঁন পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম সবুজ হাওলাদারকে কৌশলে পার্শ্ববর্তী একটি পরিতক্ত বাড়িতে নিয়ে যায় ।১৬ জুলাইয়ের অংশ হিসেবে ১৭ জুলাই রাত অনুমান ০১ টা১৫ মিনিটে আসামী লাল চাঁন ও বেল্লালদ্বয় ভিকটিম সবুজ হাওলাদারকে তার ব্যবহৃত গামছা দ্বারা গলায় ফাঁস লাইগাইয়া হত্যা করেন এবং লাশ গোপন করার উদ্দেশ্যে জঙ্গলের মধ্যে লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখে। মহিপুর থানা পুলিশ এহেন সফলতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করিতে বদ্ধ পরিকর।
Comments