আজ থেকে ৫৮ দিন সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা পুনর্বিন্যাস করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সময়সীমা কমিয়ে ৫৮ দিন নির্ধারণ করার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ প্রায় একই সময়ে করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সোমবার (১৪ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে ৫৮ দিনের সর্বাত্মক সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা, যা চলবে ১১ জুন পর্যন্ত। প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে ইলিশ রক্ষায় সমুদ্রগামী মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞায় সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে খুশি উপকূলের জেলেরা। তারা বলছেন, শুরু থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার দাবি করে আসছিলেন। কারণ, এতে সাগর-নদী মাছশূন্য হয়ে পড়েছিল। তাই সাগরতীরের জেলেরা খুব কষ্টে ছিলেন। এমনকি মৎস্য ব্যবসাও ধ্বংস হওয়ার অবস্থায় পৌঁছেছিল।
দীর্ঘদিন পর হলেও এই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জেলেরা খুব খুশি।
এত দিন পর্যন্ত প্রতি বছর বাংলাদেশের জল সীমায় মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকত ৬৫ দিন; ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। আর ভারতের জলসীমায় ৬১ দিন; ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন।
বঙ্গোপসাগরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার মধ্যে প্রায় ৩৯ দিন ভারতীয় মৎস্যজীবীদের একাংশ জলসীমা লঙ্ঘন করতেন। তারা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। এর ফলে কয়েক লক্ষ জেলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হত।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত দুই দেশের জলসীমায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। ফলে জলসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা আর ঘটবে না।
যদিও নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা পুনর্বিন্যাস করার জন্য বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল এবং দেশের উপকূলীয় এলাকার জেলেরা নৌ অবরোধ, মানববন্ধনসহ নানা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবি তুলে ধরে আসছিলেন।
গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের সাবেক গবেষক ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এমন দাবি করে আসছিলাম। সরকার যে উদ্দেশে এই নিষেধাজ্ঞা দিত, তা দুই দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় প্রতিবেশী দেশ লাভবান হত। এটা মৎস্য সম্পদের জন্য একটি বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এটা দেশের সামুদ্রিক মৎস্য খাতের জন্য সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।'
Comments