বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হলো হানিফের বাড়ি
কুষ্টিয়ায় এবার বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক এমপি মাহবুবউল আলম হানিফের বাড়ি। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার পরে শহরের পিটিআই সড়কের বাড়ির সামনে মশাল মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতা অবস্থান নিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন। পরে একটি বুলডোজার নিয়ে প্রথমে বাড়ির প্রধান ফটক ও বাউন্ডারি ওয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্র-জনতা স্লোগান দিতে থাকে 'স্বৈরাচারের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও'। হানিফের বাড়ির সামনে অনেকেই ভিড় করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন হানিফের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশত্যাগের খবরে পরেরদিন ৫ আগস্ট হানিফের বিলাসবহুল বাসভবন পুনরায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে থেকে জানানো হয়, ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার রাতে ছাত্রদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। এরপর শেখ হাসিনা ভাষণ দিলে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে পিটিআই রোডে হানিফ এমপির বাড়িতে এক্সকেভেটর মেশিন নিয়ে আসে লোকজন। রাত ১০টার পর থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হানিফের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ হাজারো ছাত্র-জনতা উপস্থিত ছিল।
এরপর হানিফের বাড়ি থেকে মিছিল নিয়ে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের শহরের কদমতলা বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় নিচ তলায় রাখা কিছু চেয়ার টেবিলে আগুন ধরিয়ে দেই বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা।
সেখান থেকে একটি দল লাঠিসোটা নিয়ে শহরের মজমপুর এলাকায় অবস্থিত সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবু তৈয়ব বাদশার বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গ্লাস ভাঙচুর করে।
জানা গেছে,পতিত আওয়ামী সরকারের শাসন আমলে হানিফের পিটিআই রোডে অবস্থিত বাসভবন হয়ে উঠেছিল কুষ্টিয়ার কেন্দ্রবিন্দু। হানিফ ঢাকাতে থাকলেও এই বাড়ির দেখভালের দায়িত্ব ছিল তারই চাচাতো ভাই শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার উপরে। শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলেও জেলার রাজনীতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল আতার উপরে। সিনিয়র নেতারাও তার কাছে ছিল কোনঠাসা। সকল ধরনের দুর্নীতির মাধ্যমে হানিফের ছায়াতলে থেকে শূন্য থেকে হয়েছেন হাজার কোটি টাকার মালিক আতা।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলার সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান বলেন,স্বৈরাচারীরা রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে। তারা মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই বাংলায় তাদের ঠাঁয় নেই। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম চলছে চলবেই।
Comments